বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক হার কমানো এবং সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একটি প্রতিনিধিদল।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চিফ অফ মিশন রেসিডেন্সে এ সভার আয়োজন করে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।
এতে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) ব্রেন্ডন লিঞ্চের, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, লেবার অ্যাটাশে লীনা খান।
এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক আবদুস সালাম এবং বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ এর চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই ২০% ট্যারিফ সুবিধা অর্জন করেছি, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ওপর গড় এমএফএন শুল্ক ১৬.৫% এবং এর সঙ্গে ২০% পাল্টা শুল্ক মিলিয়ে মোট শুল্কের পরিমাণ প্রায় ৩৬.৫%, যা বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বেসরকারিখাতে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত, পোশাক শিল্পের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে শুল্ক আরও কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী প্রস্তাবনা নিয়েও আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি বলেন, আর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সংগতি বজায় রেখে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার করা হবে, এটি অত্যন্ত প্রত্যাশিত। তিনি আইএলও এর গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী করার পরামর্শ দেন।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান পোশাক শিল্পের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করে বলেন, তার বোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তার বোর্ড শ্রম সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ৮১টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে অব্যাহতভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং শিল্প ও কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে দেশের বাস্তবতা, শিল্পের প্রেক্ষাপট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং বাস্তবায়ন যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনাক্রমে শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্বাহী আদেশ নিয়েও আলোচনা হয়, যা অনুসারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পোশাকে যদি ২০% বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০% অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত