বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জনজীবনে নাভিশ্বাস

ভুল সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন

ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির পর দেশের জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। পরিবহন ধর্মঘটের মাধ্যমে শুরু হয় দুর্ভোগ। ধর্মঘটের অবসান ঘটেছে ২৭ শতাংশ বাস ও ৩৫ শতাংশ লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। এ সিদ্ধান্ত ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া রাখছে জনজীবনে। ডিজেলের দাম কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারে বাড়ছে হু হু করে। সে হিসেবে দেশে দাম বাড়ানোর বিষয়টি ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে শতভাগ যৌক্তিক। তবে কোনো দেশের সরকারের ভূমিকাকে লাভ-লোকসানের সরল হিসাবে ফেলার মধ্যেও রয়েছে ভ্রান্তি। ডিজেলের দাম বৃদ্ধি শুধু পরিবহন ভাড়া বাড়ায়নি, বাড়িয়েছে প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। শাকসবজি, চাল-ডাল, পিঁয়াজ সবকিছুর দাম বেড়েছে পরিবহন খরচের অজুহাতে। সেচ মৌসুমের ঠিক আগে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষিযন্ত্র ব্যবহার ও সেচকাজে ব্যয় বাড়বে। কৃষকের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনেও গুনতে হবে বাড়তি অর্থ। সরকার এ মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে আরও ‘ধীরে চল’ নীতিতে এগোতে পারত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বোদ্ধাজনদের বিবেচনায় ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সরকার ও পরিবহন মালিকরা লাভবান হলেও বলির পাঁঠা হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ডিজেলের এ বাড়তি দামের প্রভাব পুরোটাই সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে যাবে। তাদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। স্বভাবতই মানুষ এ বাড়তি মূল্যের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব নিয়ে আতঙ্কিত। করোনাকালে সরকার ১ লাখ কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে। সাধারণ হিসাবে এটি অপচয় হলেও তাতে অর্থনীতির ধস ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে বৃহত্তর জনকল্যাণ। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লেও লাভ-লোকসানের হিসাবে জনস্বার্থ উপেক্ষা করা হয়েছে। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস সৃষ্টি করা হয়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধি জনগণের হৃদয়ে সরকারের যে স্থান ছিল তা প্রশ্নবিদ্ধেও হুমকি সৃষ্টি করছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর