বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

মনে হচ্ছিল রাস্তায় কি যেন একটা নেই

জেনিফার ফারেল

মনে হচ্ছিল রাস্তায় কি যেন একটা নেই

২০১২ সালে বাংলাদেশকে প্রথম দেখি। তবে সেটা বেশি দিনের জন্য নয়। ২০১৩ সালের অক্টোবরে আমি ফুলব্রাইট স্কলারশিপ পাই বাংলাদেশে। আর তারপর... অনেকটা দিন হয়ে গেল এখানকার মানুষের সঙ্গে। এই তো প্রায় ২ বছর! বাংলাদেশের মানুষ প্রথম থেকেই আপন করে নিয়েছিল আমাকে। আমার বন্ধুরা তাদের পরিবারের অংশ করে নিয়েছিল। তাদের প্রত্যেকটা উৎসবেই আমার উপস্থিতি চাইত তারা। ইউএসএর নিজ পরিবারকে খুব মিস করতাম। কিন্তু সেটার অভাব অনেকটাই কেটে গিয়েছিল আমার এখানকার বন্ধু আর সহকর্মীদের পেয়ে। আর এখন? অনেকেই জানতে চায় এতদিন কি করে এখানে আছি। তাদের বলি আমি, বাংলাদেশ আমার নিজের বাড়ির মতো। এখানকার মানুষ, তাদের উৎসাহ, আন্তরিকতা, আতিথেয়তা, তরুণদের স্বপ্নমাখা চোখ- সবকিছু দারুণভাবে টানে আমাকে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষগুলো তো এক কথায় অতুলনীয়! ওদের আছে ভীষণ ভালোবাসাপূর্ণ একটা হৃদয়। এক কথায় বাংলাদেশকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি! আমেরিকায় খুব একটা কাছ থেকে ঈদ বা রমজান মাসকে অনুভব করিনি কখনো। কিছু মুসলিম বন্ধু ছিল আমার স্কুল আর ভার্সিটিতে। তবে অতটা কাছের ছিলাম না তাদের। কিন্তু বাংলাদেশে এসে মনে হয়েছে এখানে থেকে ঈদ বা রমজান মাসকে হাতছাড়া করাটা বোকামিই হবে। মোট দুবার ঈদ করেছি আমি এ দেশে। প্রতিবারেই খুব চমৎকার অনুভূতি হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে সেহরি করেছি, ইফতার করেছি। রোজা না রাখলেও অপেক্ষা করে থেকেছি ঈদের জন্য। ঈদের দাওয়াতে শাড়ি পরে বেড়াতে গিয়েছি সবার বাসায়। নাচ, গান, হাসি, আনন্দে খুব ভালো কেটেছে সময়টা। সবচাইতে ভালো লেগেছে ঈদের আগের দিন। সেদিন রাতে আমরা অনেক বন্ধু মিলে পুরান ঢাকায় ঘুরে বেড়িয়েছি। সারা রাত সেখানেই ছিলাম আমরা। যদিও একটা ব্যাপারে আশ্চর্য হয়েছি। ঈদের দিন রাস্তা অনেক ফাঁকা পেয়েছি আমি। মনে হচ্ছিল রাস্তায় কি যেন নেই! আমার অনেক বন্ধু তাদের গ্রামের বাড়িতে দাওয়াত দিয়েছিল আমাকে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকায় অনেক ইচ্ছা সত্ত্বেও ওখানে যেতে পারিনি আমি। তবে অপেক্ষায় আছি। এবার তাদের দাওয়াত আর মিস করব না।

পেশা : প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ক্রিটিকাল লিঙ্ক, দেশ : আমেরিকা

 

 

সর্বশেষ খবর