শিরোনাম
সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ → ফেরদৌস ওয়াহিদ

জ্যোতিষী বলেছেন আমি কোনো দিন গান ছাড়তে পারব না...

জ্যোতিষী বলেছেন আমি কোনো দিন গান ছাড়তে পারব না...

এমন একটা মা দে না, আগে যদি জানিতাম, মা মুনিয়া, দুঃখ ছুঁয়ে দেখো- এমন অনেক জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা ফেরদৌস ওয়াহিদ। কিন্তু ২০২০ সালের পর আর গান করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন এই শিল্পী। এরই মধ্যে চলছে তার সর্বশেষ ২২টি গানের নতুন প্রজেক্ট। গান ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন - আলী আফতাব

 

নতুন বছরের ৩১ ডিসেম্বর গান ছেড়ে দেওয়ার যে কথা ছিল, তাতে কি আপনি বদ্ধপরিকর?

ওই সময়ের পর আমার আর গান করার কোনো ইচ্ছা নেই। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, কলকাতার একজন বড় জ্যোতিষী বলেছেন, ‘আমি কোনো দিন গান ছাড়তে পারব না।’ শুধু জ্যোতিষী নন অনেকেই বলেছেন, আমি কোনো দিন গান ছাড়তে পারব না। এ ছাড়া আমি মনে করি, প্রত্যেক শিল্পীরই একটা সময় থাকে। যখন সে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকে, তখন মানুষ তাকে মনে রাখে। যখন আরেকজন চলে আসে তখন আবার তাকে ছুড়ে ফেলে দেয়। তাই আমাকে ছুড়ে ফেলার আগেই নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরে দাঁড়ানোর।

 

এই চলে যাওয়ার পেছনে কি কোনো অভিমান কাজ করছে?

আমি কোনো অভিমান থেকে চলে যাওয়ার কথা বলিনি। আমার চার যুগের ক্যারিয়ারে মানুষের যখন প্রয়োজন হয়েছে আমাকে খুঁজে বের করেছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান করেছি। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া কেউ আমাকে কোনো দিন কোনো অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়নি। এ ছাড়া  ‘সিটি ব্যাংক সম্মাননা’ ছাড়া আমার এই ক্যারিয়ারে আর কোনো বড় পুরস্কার যোগ হয়নি। এজন্য আমার কোনো দুঃখ নেই। এটাকে বলা যায় দুঃখবিহীন অপ্রাপ্তি হা..হা..হা..।

 

নতুন ২২টি গানের কী অবস্থা?

এই গানগুলোর ১২টি নতুন, ১০টি বিভিন্ন সময় আমার গাওয়া পুরনো গান। প্রকাশ করব স্টেজ ভার্সন ভিডিও আকারে। গানগুলোর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে আমার ছেলে হাবিব ওয়াহিদ। এরই মধ্যে বেশ কিছু গানের কাজ শেষ করেছি। এখন হাবিবের একটি গানের কাজ চলছে। ইচ্ছা আছে মার্চের ২৬ তারিখ থেকে একে একে গানগুলো প্রকাশ করে দেব।

 

চার যুগের এই ক্যারিয়ারে আপনার গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় ৫০০! এত কম কেন?

গানের সংখ্যা কম হওয়ার দায় আমার নিজেরই। কারণ আমি কোনো দিন কারও পেছনে ঘুরিনি, পিআর করিনি। যারা আমাকে যখন ডেকেছে, গেয়েছি। একপর্যায়ে অনেক সংগীত পরিচালক আমাকে ডাকা বন্ধ করে দিল। ২০০০ সালে হাবিব এসে আমাকে একটা ধাক্কা দেয়। সেই ধাক্কায় অনেকেই আবার ডাকতে শুরু করে। আমার একটা স্বভাব হলো, কোনো দিন কারও কাছে গিয়ে হাত পাতি না। ইচ্ছা করলে, পিআর করলে এখনো প্রতিদিন টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করতে পারি। আমার গান ৫০০ হলেও এর মধ্যে প্রায় ২০০ মানুষ পছন্দ করেছে, হিট হয়েছে। ভালো ভালো গান আমার কপালে পড়েছে। যারা আমাকে দিয়ে গাইয়েছেন তারা একান্তভাবে মনে করেছেন আমার গলাটিই তাদের দরকার। 

 

ক্যারিয়ারের প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তি?

মানুষের কাছ থেকে চরম ভালোবাসা পেয়েছি। আমার গান যে সমাজের সব স্তরে গেছে তা কিন্তু নয়। যেটুকু গেছে একেবারে খাঁটি। আর যদি অপ্রাপ্তির কথা বলতে হয়, সংগীতজীবনের তিনটি যুগ আমি দেখেছি। জন্মযুগ, মধ্যযুগ এবং এখনকার যুগ। সবচেয়ে আনন্দ লাগে এখনো আমি গান গেয়ে যাচ্ছি, মানুষ শুনছে। তিন-চার দিন আগেও একটি অনুষ্ঠান করেছি। সবাই খুব সম্মান করল। আফসোস একটাই, মন মতো আরও তৃপ্তি ভরে গান গাইতে পারিনি। আমার হয়তো আরও বেশি গান গাওয়ার কথা ছিল।

 

‘স্মৃতিরও সেই পটে’ গানটির পেছনে আপনার অনেক গল্প লুকিয়ে আছে। শুনতে চাই।

১৯৭৯ সালের কথা। গানটি তখন এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে আমি যখন রুখসানাদের [ওয়াহিদ] বাড়িতে গান করতে যাই শুরুতেই সে এই গানটির অনুরোধ করে। তখন সে ছিল আমার ভক্ত। এরপর হলো প্রেমিকা। তারপর ঘরণী। এখন তো হাবিবের মা। এই গানটির কারণেই আমাদের আজকের এত কিছু।

সর্বশেষ খবর