বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : ইন্তেখাব দিনার

ভিন্ন চরিত্র, লুকের মধ্যে ডুবে থাকতে পছন্দ করি

ভিন্ন চরিত্র, লুকের মধ্যে ডুবে থাকতে পছন্দ করি

ইন্তেখাব দিনার। মঞ্চনাটক থেকে তাঁর উত্থান, টিভি নাটকে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা। বিভিন্ন সময় তিনি বেছে বেছে চলচ্চিত্রেও অভিনয় করে থাকেন।  বর্তমানে ওটিটি প্ল্যাটফরমে একজন দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য অভিনেতা তিনি। ভিউহীন এই অভিনেতা নির্মাতাদের কাছে ‘ঝামেলামুক্ত’ মানুষ। শুধু অভিনয় দিয়েই দর্শককে মাতোয়ারা ও মুগ্ধ করা এই তারকার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কলকাতা থেকে কবে ফিরেছেন? বাসায় এখন?

রবিবার রাতে। না, একটি টিভিসির ভয়েস দিতে নিকেতনের ইকিউ স্টুডিওতে।

 

বুম্বাদার আমন্ত্রণে তাঁর বাসায় আপনিসহ অনেকেই গিয়েছিলেন। কেমন সময় কাটালেন?

যেভাবে প্রসেনজিৎদা আপ্যায়ন ও সম্মান দেখালেন-আমি খুবই অভিভূত। তাঁর অমায়িক ব্যবহার আর বিস্তর আয়োজনে মুগ্ধ আমার মতো আমন্ত্রিত সবাই। একজন শিল্পীর বিনয় তাঁকে মানুষ হিসেবে অনেক উঁচুতে নিয়ে যায়। সেটি প্রমাণ করেছেন বুম্বাদা। তিনি রাতের খাবারের আয়োজন করেছিলেন তাঁর বাড়িতে। চমৎকার সময় কাটিয়েছি তাঁর বাড়িতে। এমনকি আপ্যায়ন শেষে তিনি নিজের গাড়িতে করে আমাদের পৌঁছিয়েও দিয়েছেন। এই উদ্যোগটা ছিল চঞ্চল ভাইয়ের। এর আগে চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে অনেক কাজ হয়েছে প্রসেনজিৎদার। তাই চঞ্চল ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সখ্য বেশি।

 

বুম্বাদার আতিথেয়তার প্রশংসা করে বিজরী বরকতুল্লাহ সেই মুহূর্তের কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ছবিতে অনেক চেনামুখ ছিল...

হ্যাঁ। বৃন্দাবনদা, খুশি আপা ও তাঁর দুই সন্তান দিব্য-সৌম্য, চঞ্চল ভাইয়ের স্ত্রী ও ছেলে মুগ্ধ, শাওকী সায়েদও ছিলেন। অনেকেই থাকতে পারেননি সেই আয়োজনে। আগেই মোশাররফ ভাই, ফারিণ, আশফাক নিপুণ ও অমিতাভ রেজা ভাই দেশে ফিরে যায়। আর শ্যামল-মাহা চলে যায় দার্জিলিং ঘুরতে।

 

আপনার কাজ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় দেখেছেন?

তিনি আমার কিছু কাজ দেখেছেন। সম্প্রতি ‘কারাগার’ দেখে ভালো লেগেছে জানালেন। আর একটি কথা বললেন যে, আমার স্ত্রী চরিত্রটি কে করেছেন? কারণ তিনি সেই চরিত্রটির পারফরমেন্সে অনেক মুগ্ধ। আমি যখন বিজরীকে দেখিয়ে বললাম ইনিই করেছেন, তিনি তো রীতিমতো অবাক! তিনি বিজরীর অনেক প্রশংসা করলেন। দেশের শিল্পীদের কাজকে অনেক এপ্রিসিয়েট করলেন।

 

মূলত হইচইয়ের অনুষ্ঠানেই কলকাতা যাওয়া, তাই না?

হুমম, তাই। ২০ তারিখ দুপরে যাই, সন্ধ্যায় প্রোগ্রামে অংশ নিই। ভালো ছিল অনুষ্ঠানটি। ২৫টি কনটেন্টের নাম ঘোষণা করা হয় সেখানে। এরমধ্যে ২১টি ওদের, বাকি চারটি আমাদের। মহানগর-২, কারাগার-২ ও কাইজার-২ এর সঙ্গে অমিতাভ রেজার নির্মাণে নতুন একটি কনটেন্ট হইচই নিয়ে আসছে।

 

ঠিক ২১ বছর আগে মঞ্চে উঠেছিলাম যুবদার (খালেদ খান) সঙ্গে ‘নূরলদীনের সারা জীবন’-এ। সেই যুবদার  চরিত্রেই অভিনয় করেছি ‘মিতা যুবরাজ উৎসবে’।

 

ওদের ২১টি আর আমাদের চারটি মাত্র?

এটা আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে। যদি চারটি কনটেন্টই ঠিকঠাক মতো দর্শকদের উপহার দিতে পারি সেটা উত্তম। আর এত অল্প সময়ে আমাদের ২১টি করার মতো কনটেন্ট নেই। আমাদের কনটেন্ট এপার-ওপারের দর্শকদের মাঝে ভালো রেসপন্স পেয়েছে বলেই সবকটির সেকেন্ড সিজন হচ্ছে।

 

কারাগার সিজন-টুর শুটিং হয়েছে?

শুট করেছি অনেক আগেই। কারাগারের সঙ্গেই বাকি সিজনের শুট হয়েছে। দুই সিজন আলাদা করে শুট করেছি। কমপ্লিট একটা কাজ।

 

আপনার ‘বীরত্বে’ তো মুগ্ধ সবাই। এমনটিই আশা করেছিলেন?

মুসা চরিত্রটি নিয়ে অনেক স্টাডি করেছি, পরিশ্রম করেছি। অভিনয়ে নিজের ইমেজ ভেঙে প্রথমবার ভিন্ন ইমেজে কাজ করেছি। লুক অন্যরকম দেখাতে উইগ ম্যানেজ করার জন্য সাজু খাদেমের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে একজন লোকের সঙ্গে দেখা করেছি। অনেক সময় দিয়েছি। কতটুকু পেরেছি জানি না, তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে এই সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করেছি। সাইদুল ইসলাম রানাও নির্মাণে শতভাগ দিয়েছেন।

 

খিজির হায়াত খানের ‘ওরা ৭ জন’ ও রায়হান রাফির ‘দামাল’-এ অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রগুলো দর্শক কেমনভাবে নেবে?

খিজিরের চলচ্চিত্রটি নিয়ে অনেক স্যাটিজফাইড। যারা ব্যাটেল ফিল্ড দেখেননি তারা এই সিনেমাটিতে রিয়েল মুক্তিযুদ্ধের আবহ দেখতে পাবেন। ওয়ারফিল্ড দেখানো হয়েছে এটিতে। নির্মাতা কোনো কিছুতেই আপস করেননি। আমি খিজিরের সততা ও পরিশ্রমে অনেক মুগ্ধ। আর রাফির ‘দামাল’-এ আমি ফুটবল দলের ম্যানেজার হিসেবে অভিনয় করেছি। আমার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে সিনেমার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। যারা ফুটবল পছন্দ করে, ঐতিহাসিক চরিত্র পছন্দ করে, মুক্তিযুদ্ধে তারুণ্য পছন্দ করে-তারা সিনেমাটি দেখবে বলে আশা করি।

 

২১ বছর পর মঞ্চে! কেমন অনুভূতি?

সেই প্রথম দিনে মঞ্চে ওঠার যেমন উত্তেজনা ছিল, ভয় ছিল- সেরকমই ছিল। অনেক বড় গ্যাপে মঞ্চে উঠেছি, মাত্র ৪ ঘণ্টা রিহার্সেল করে। ঠিক ২১ বছর আগে মঞ্চে উঠেছিলাম যুবদার (খালেদ খান) সঙ্গে ‘নূরলদীনের সারা জীবন’-এ। সেই যুবদার চরিত্রেই অভিনয় করেছি ‘মিতা যুবরাজ উৎসবে’। সময়ের কি অদ্ভুত পরিক্রমা। মাসুম রেজার রচনায় ও মোস্তাফিজ শাহীনের নির্দেশনায় ‘আবছায়ায় যুবরাজ’-এ ছিলেন রওনক হাসান, ত্রপা মজুমদার ও জ্যোতি সিনহা।

 

দিনারের নামের আগে এখন বলা হয় ‘ওয়েব শিল্পী’...

আমি ভিন্ন চরিত্র, লুকের মধ্যে ডুবে থাকতে পছন্দ করি। চরিত্রের অভিনয়ের সুযোগ থাকলে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিই। সেটা যে কোনো প্ল্যাটফরমই হোক।

সর্বশেষ খবর