বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার :- ইরেশ যাকের

আমাদের ইন্ডাস্ট্র্রি বলিষ্ঠভাবে গঠন করা হয়নি

আমাদের ইন্ডাস্ট্র্রি বলিষ্ঠভাবে গঠন করা হয়নি

একজন ভিন্ন ঘরানার অভিনেতা ইরেশ যাকের। সাধারণ প্রথাগত অভিনয়ের বাইরে অভিনয় করেও যে নিজ প্রতিভা চেনানো যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই তারকা।  তারকা মা-বাবার সন্তান হয়েও নিজেকে পরিচয় করিয়েছেন আপন মহিমায়। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন? শুটিং আছে আজ?

জি, অনেক ভালো আছি। না, শুটিং নেই। আর আমি এখন খুবই কম কাজ করি। গল্প ও চরিত্র পছন্দ হলে কিছু করা হয়।

 

আপনার কি মনে হয় অ্যাক্টরস ইকুইটি নির্বাচিত হওয়া থেকে এ পর্যন্ত শিল্পীস্বার্থ সংরক্ষণ ঠিকভাবে করতে পেরেছে?

দেখুন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা তো বলিষ্ঠভাবে গঠন করা হয়নি। তো সেই জায়গায় আমাদের অভিনেতা, আমাদের পারফরমারদের সঙ্গে নিয়ে যে কাজই করার চেষ্টা হবে, তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদিই হবে। প্রতিশ্রুতি থাকবে। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কাজ করে যেতে হবে। সে কাজটা যে রাতারাতিই হয়ে যাবে, সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। যদিও আমি এটার শুধু সদস্য, সাংগঠনিক কেউ নয়। আমার মনে হয় তারা যে চেষ্টাগুলো করে যাচ্ছে আর আমাদের পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে যেহেতু কোনোরকম গঠন এই মুহূর্তে নেই-সেই জায়গা থেকে তারা যে কাজগুলো করে যাচ্ছে সেগুলো অবশ্যই প্রশংসনীয়।

 

টিভি নাটক-ওটিটি প্ল্যাটফরমে ঘুরেফিরে কয়েকজন তারকাই কাজ করছেন। এই সিন্ডিকেটে অনেক শিল্পীই ছিটকে পড়ছেন। এ নিয়ে কী বলবেন?

আপনাদের তো সালমান খান বা শাহরুখ খানকে নিয়ে নালিশ করতে দেখি না! নিশো-অপূর্ব বা মোশাররফ করিমকে নিয়ে এত নালিশ কিসের?

 

ইরেশ যাকেরকেও তো দর্শক ঠিকঠাকভাবে পর্দায় দেখতে চায়...

ইরেশ যাকেরের যদি ক্ষমতা থাকে, তার যদি সেই এবিলিটি থাকে, প্রতিভা থাকে অথবা মানুষ যদি চায় তাহলে ইরেশ যাকেরকেও আপনারা পাবেন। এখন কথা হচ্ছে অন্যটা। নতুনভাবে চিন্তা করে বা নতুনভাবে কাজ নিয়ে চিন্তা করা যায় কি না। সেটা অবশ্যই যায়। সেখানে অ্যাক্টরস ইকুইটি একা ব্যর্থ নয়; প্রযোজক সমিতিও আছে। টিভি চ্যানেলের মালিকরাও তো এই দায় এড়াতে পারেন না। পেশাগতভাবে কিন্তু অ্যাক্টরস ইকুইটির সবাই বেঁচে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের ঘাড়ে সবকিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। আরও ক্ষমতাবান লোকও আছেন এসবের পেছনে।

 

একসময় টেলিভিশন প্রোগ্রাম  প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। কিন্তু এই যে দু-একটি নাটকে প্রোডিউস করেই নতুন অ্যাসোসিয়েশনের পদে রয়েছেন। ভবিষ্যতে এরা টিভি নাটকে কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন?

যেহেতু আমি এ সংগঠনের সঙ্গে এই মুহূর্তে নেই, তাই এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না।

 

‘শনিবার বিকেল’র ট্রেইলারে একঝলক আপনাকে খুঁজে পাওয়া গেল...

দীর্ঘ চার বছর সেন্সরের রুদ্ধদ্বারে আটকে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’। এ দেশে মুক্তি নিয়ে চলছে জটিলতা। তবে ছবিটি ১০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মুক্তি পাচ্ছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় প্রকাশ করা হয় ছবিটির ট্রেইলার। ১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের এই ট্রেইলারে যদিও খুব বেশি কিছু ছিল না।

 

হামলাকারীর ভূমিকায় দেখা গেছে ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়দের...

হ্যাঁ। ট্রেইলারে জঙ্গি হামলার নৃশংসতার খানিকটা আঁচ দেওয়া হয়েছে। গুটিকয়েক রহস্যজনক সংলাপ আর গোলাগুলিও দেখানো হয়েছে।

 

নতুন আরেকটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন...

কাজলরেখা। গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাইয়ের। কাজটা ভালো হয়েছে।

 

অভিনয়ে আসায় মা-বাবার ভূমিকা কতুটুকু ছিল?

একবার বাবাকে বললাম, বাবা আমি অভিনয় করতে পারব? বাবা বললেন, না। তোমার এরকম সাইজ, চেহারা দেখলে কেউই কাস্টিং করতে চাইবে না। তো মেনে চুপ করে রইলাম। এরপর মায়ের কাছে তিনবার অডিশন দিয়ে ফেল করি। কিন্তু রতনদা সবসময় আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমিও খুবই কনফিডেন্ট ছিলাম। এরপর  রেদয়ান রনির ‘চোরাবালি’তে ছোট্ট একটি ভিলেনের চরিত্র করেছিলাম। 

 

কমার্শিয়াল একটি সিনেমা করে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন...

সেটা শিহাব শাহিনের ‘ছুঁয়ে দিলো মন’। সেই ছবিতে ভিলেন চরিত্র করার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছিলাম।

 

নায়কের চরিত্র থাকতে কেন নেগেটিভ চরিত্র করতে ইচ্ছা হলো?

সুন্দর চেহারা যাদের তারাই তো হিরো হয়। বাংলাদেশে আপনি দেখতে ভালো হলে হিরো হবেন, না হলে চঞ্চল চৌধুরী হবেন, আর তা না হলে ভিলেন হবেন। 

 

তারকা পরিবার থেকে আপনি অভিনয়ে এসেছেন, তো কোনো ধরনের স্ট্রাগলের ভিতর দিয়ে কি আপনাকে যেতে হয়েছে?

যে কোনো কাজই তো আসলে ঠিকঠাকমতো করতে হবে। ভালো কাজ করতে হলে সব প্রফেশনেই একটা চাপ থাকে।

 

বর্তমান নাটক নিয়ে যদি কিছু বলেন...

এখন আসলে নাটক পাইকারি বাজার হয়ে গেছে। ভালো কাজের কম্পিটিশন নেই। কোনোভাবে কাজ শেষ করাটাই মুখ্য হয়ে গেছে। আগে সব জায়গায় একটা সময় পাওয়া যেত। প্রি-প্রোডাকশনে সময় নিত। এখন তেমন হয় না।

 

কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?

সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।  চরিত্র যে ধরনেরই হোক না কেন তা যদি স্ক্রিপ্ট পড়ে এক্সেপ্ট করি তাহলে তাকে রিসপেক্ট করতে হবে।

সর্বশেষ খবর