রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

রুবেল-সুচরিতার পর এবার জায়েদের সদস্যপদ বাতিল

পান্থ আফজাল

রুবেল-সুচরিতার পর এবার জায়েদের সদস্যপদ বাতিল
সভাপতি হিসেবে আমি কি তাঁদের চিঠি দিতে পারি না? কোন গঠনতন্ত্রে আছে চিঠি দেওয়া যাবে না? জায়েদ খান কেন এ কথা বলেছেন তা তাঁকেই জিজ্ঞাসা করুন।  ------- ইলিয়াস কাঞ্চন

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত কমিটি থেকে অভিনেত্রী সুচরিতা ও চিত্রনায়ক রুবেলের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত হতে যাচ্ছে। শিল্পী সমিতি থেকে প্রাপ্ত এক চিঠিতে দেখা যায়, কার্যনির্বাহী কমিটির পরপর তিন মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেননি এবং সমিতির উন্নয়নমূলক কোনো কাজে দেখা যায়নি সুচরিতা এবং রুবেলকে। পরপর তাঁদের নোটিস দেওয়া হলেও কোনো সাড়া দেননি। তবে ৬ ফেব্রুয়ারি সুচরিতা ও রুবেল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বরাবর কারণ দর্শানো নোটিসের ব্যাখ্যা দিয়ে চিঠির উত্তর দেন। কিন্তু কারণ দর্শানো নোটিসের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় নায়ক রুবেল ও নায়িকা সুচরিতার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পদ স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও শোকজের জবাব না দেওয়ায় চিত্রনায়ক জায়েদ খানের সদস্যপদও বাতিল করতে যাচ্ছে সমিতি। আজ জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের মতবিনিময় সভায়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, আপনি (জায়েদ খান) সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য হয়ে বেশ কয়েক দিন থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও ইউটিউব চ্যানেলে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করছেন, যা সমিতির সাধারণ সদস্য ও সমিতির ভাবমূর্তি দেশের মানুষের কাছে ক্ষুণœ হয়েছে। তাই কেন আপনার বিরুদ্ধে সমিতির গঠনতন্ত্র ৭(ক) ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা পত্র পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জায়েদ খান বলেন, ‘আমি মুম্বাইয়ে থাকা অবস্থায় তিনি আমাকে চিঠি দিয়েছেন। কারণ ওই সময় আমি এই চিঠির উত্তর দিতে পারব না বলে প্রিপ্ল্যান করে চিঠিটি দিয়েছেন।’ জায়েদ খান বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার সঙ্গে চরম অন্যায় করা হচ্ছে। এ পদটি নিয়ে মামলা এখনো চলমান। তিনি কোনোভাবেই আমাকে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠাতে পারেন না। আর ৭ (ক) ধারা মোতাবেক কেউ যদি সংগঠন পরিপন্থী বা বিরোধী কোনো কাজ করে তবে তার সদস্য পদ বাতিল হবে। আমার জানা মতে, আমি এমন কোনো কিছুই করিনি। এটা অন্যায়! এটা রীতিমতো নোংরামি বিষয়, যা অনেক দিন ধরে লাগাতার করেই যাচ্ছেন। কারণ দর্শানোর চিঠি যদি দিতেই হয় তাহলে সমিতির সভাপতি অফিশিয়াল প্যাডে আমাকে দিতেন। শুধু আমাকে হয়রানির জন্য তাঁরা এসব কার্যকলাপ করে যাচ্ছেন। অর্থাৎ ক্ষমতা দেখিয়ে পদ বাতিলের মিশনে নেমেছেন।

সমিতি-টমিতি কী! কী করব এসব দিয়ে? আমরা শিল্পী। শিল্পীরা তো সমিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন না, তাই না? তাঁরা তো অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ। তাঁরা তাই সমিতি নিয়েই আছেন। আমরা শিল্পীরা শিল্প নিয়েই থাকি। কারা শিল্পমনা আর কারা শিল্পমনা না, তাঁরাই মনে হয় ভালোই জানেন!’ ------ সুচরিতা

তবে সাংগঠনিকভাবে তিনি আমার সদস্যপদ বাতিল করতে পারবেন না। অন্যদিকে রুবেল ভাই ও সুচরিতা ম্যাডামের মতো সিনিয়র তারকাদেরও সদস্যপদ স্থগিতের চিঠি দিয়েছেন। কতটা অসম্মানজনক কাজ একবার ভাবুন! জোর করে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়া নিপুণের গঠনমূলক সমালোচনা করেছি বলেই তিনি আমার সদস্যপদ বাতিলের পাঁয়তারা করছেন। কেন তাঁরা যা খুশি তাই করে যাবে? আর সাধারণ সম্পাদক নিয়ে মামলা তো চলমান। নিপুণ কীভাবে সেই পদকে কলুষিত করে নিজেই নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে শিল্পী সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করছেন? এটা কি ঠিক হচ্ছে?’ এদিকে সদস্যপদ বাতিল প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সুচরিতা বলেন, ‘এটা নিয়ে কি বলব? তাঁরা যা ভালো মনে করেছেন তাই করেছেন। আর সমিতি-টমিতি কি! কি করব এসব দিয়ে? আমরা শিল্পী। শিল্পীরা তো সমিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন না, তাই না? তাঁরা তো অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষ। তাঁরা তাই সমিতি নিয়েই আছেন। সমিতি নিয়েই থাকুক। আমরা থাকলাম কি না থাকলাম-কি আসে যায়! আমরা শিল্পীরা শিল্প নিয়েই থাকি। কারা শিল্পমনা আর কারা শিল্পমনা না-তাঁরাই মনে হয় ভালো জানেন!’ অন্যদিকে সদস্যপদ বাতিল প্রসঙ্গে চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেলের (সহ-সভাপতি) বক্তব্যের জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়টি নিয়ে বর্তমান শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সভায় কি হবে তা আমি বলতে পারছি না। তাছাড়া জায়েদ খান ইস্যুতেও কোনো কথা বলতে চাই না।’ জায়েদ খান অভিযোগ করেছেন সাংগঠনিক কাজে ইলিয়াস কাঞ্চন সমিতির সভাপতি হিসেবে রুবেল ও সুচরিতাকে চিঠি দিতে পারেন না। সাধারণ সম্পাদক না থাকলে প্রয়োজনে এজিএস চিঠি দেবেন। এ বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সভাপতি হিসেবে আমি কি তাঁদের চিঠি দিতে পারি না? কোন গঠনতন্ত্রে আছে চিঠি দেওয়া যাবে না? জায়েদ খান কেন এ কথা বলেছেন তা তাকেই জিজ্ঞাসা করুন।’ এদিকে এই বিষয়ে চিত্রনায়িকা নিপুণের বক্তব্যের জন্য একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর