শুরুতেই আক্ষেপের প্রসঙ্গ। আপনাকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে না পর্দায়। কিন্তু দর্শক দেখতে চায়।
আমি নিয়মিতই অভিনয় করি, কিন্তু প্রতিদিন শুটিং রাখি না। এ কারণে পর্দায় বিশেষ সময়ে আমাকে দেখা যায়। প্রতিদিন শুটিং করার মতো গল্প এখন আর নেই। ভালো গল্প এবং চরিত্র বেছে অভিনয় করার কারণে এমনটা হতে পারে। আমাকে যারা পছন্দ করেন তাদেরও আমার এ দিকটাকে সুনজরে রাখা উচিত। কারণ আমি তাদের ঠকাতে চাই না বলেই বেছে কাজ করি।
সাম্প্রতিক সময়ে কী কাজ করলেন?
অরণ্য আনোয়ারের একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করলাম। শিরোনাম 'শহরজুড়ে পোড়াগন্ধ'। পেট্রলবোমা হামলার ওপর গল্প। কাজটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। এরপর আবু রায়হান জুয়েলের নাটক 'তেল'-এ অভিনয় করলাম। এ নাটকে দীর্ঘদিন পর আমি আর রিয়াজ ভাই অভিনয় করেছি। ভিন্নমর্ধী একটি গল্প। দর্শকের ভালো লাগবে।
অরণ্য আনোয়ারের নাটকটির খবর প্রকাশের ধরন নিয়ে ফেসবুকে আপনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
হুম। গল্প নিয়ে কিংবা চরিত্র নিয়ে একটা নিউজ হতেই পারে, কিন্তু মিনিমাম কমনসেন্স তো থাকবে সাংবাদিকদের। বিভিন্ন অনলাইনে খবর প্রকাশ ছড়িয়ে দিল, 'পেট্রলবোমায় তারিন নিহত'। এমন একটা খবরে আমার ওপর, আমার পরিবারের ওপর কী যে ঝড় বয়ে গেল! সব আত্দীয়স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষী ফোন দিয়ে অস্থির করে ফেলল। মানসিকভাবে ভেঙেই পড়লাম। আসলে ইন্টারনেট সেবা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ফলে বেশ কিছু অনলাইন নিউজপোর্টালও হয়েছে। যাদের কোনো মান নেই। শুধু গসিপ আর ফেইক নিউজ প্রকাশ করে বেড়ায়।
একটি ধারাবাহিকেও বোধহয় অভিনয় করছেন?
হ্যাঁ। ধারাবাহিকে তো আমি সাধারণত অভিনয় করি না। কিন্তু দীপংকর দীপন একজন ভালো নির্মাতা। তিনি যত্ন নিয়েই কাজ করেন। তার গল্পও ভালো লেগেছে, তাই অভিনয় করছি। ধারাবাহিকের শিরোনাম 'গ্র্যান্ডমাস্টার'।
চারদিকে একটিই কথা- বাংলাদেশের নাটক এখন আর কেউ দেখে না।
সত্যিই যদি না দেখে তাহলে আপনি জোর করে দেখাতে পারবেন না। আমরা খুব আফসোস করি বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু একবার চিন্তা করেন, আমাদের দেশে যেভাবে নাটক প্রচার হয়, এত যন্ত্রণা নিয়ে কে নাটক দেখবে! রিমোট কন্ট্রোলের যুগে কার এত ধৈর্য। আমি তো নিজের নাটক নিজেই দেখতে পারি না, বিরক্ত হয়ে যাই। তাহলে অন্যরা কীভাবে দেখবে!
তাহলে অভিনয় করেই বা লাভ কী!
আমিও সেটাই ভাবি। আমাকে তো নতুন করে দর্শকদের চেনানোর কিছু নেই। আমি তারিন- দর্শক আমাকে চেনে, ভালোবাসে। আমি ভালোবাসা থেকেই অভিনয় করছি। কিন্তু সব কিছু ঠিকভাবে হচ্ছে না। এলোমেলো অবস্থায় চলছে।
নাটকের বাজেটও দিন দিন কমছে। তাই মানও তো ধরে রাখা যাচ্ছে না।
হ্যাঁ। সব কিছুর দাম বাড়ে, কিন্তু নাটকের দাম দিন দিন কমছে। অবস্থা খুব করুণ।
তাহলে ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ কী?
খুব খারাপ। এখনো সময় আছে, যদি আমরা সব কিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারি তবে হারিয়ে ফেলব সব।
জাকারিয়া সৌখিন