বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা নায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ হত্যা মামলার তদন্ত স্থগিত করেছেন আদালত। আজ শনিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এই আদেশ দেন।
এরআগে গত ১৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ একটি রিভিশন আবেদন দাখিল করলে আজ শুনানি শেষে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে প্রয়োজনীয় কগজপত্রসহ আগামী ২৭ জুলাই অধিকতর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলা র্যাবকে পুনঃতদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরফলে জনপ্রিয় এই চিত্রনায়কের মৃত্যুর ঘটনা প্রায় ২০ বছর পরে আবার আলোচনায় আসে এই মামলা। তারআগে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহর।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহ। পরে সালমান শাহর পিতা এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। পরে অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি এক সঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। এরপরে সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে উক্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে। সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে তার পিতা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত।
এরআগে সিলেটের হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গণের কবর থেকে সালমানের লাশ তুলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানকার ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক দল মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে মতামত দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। পরে সালমানের বাবা কমরউদ্দিন তার ছেলের মৃত্যুকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে কয়েকজনের নাম উলেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন।
এরপর ফের গোয়েন্দা পুলিশ এবং পরে সিআইডির তদন্তে ও আত্মহত্যার কথা বলা হলে সেসব প্রতিবেদনে নারাজি দেন সালমানের বাবা। পরে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলে। এর মধ্যে সালমানের বাবাও মারা যান। পরে দীর্ঘ তদন্তের পর ঢাকার মহানগর হাকিম এমদাদুল হক সম্প্রতি সালমান শাহকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে গত ৮ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলুফার চৌধুরী ওরফে নীলাকে আদালতে হাজির হতে নোটিস দেওয়া হয়। ওই নোটিস পেয়ে তিনি আদালতে হাজির হন। পরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৬ এপ্রিল, ২০১৫/ রশিদা