অশ্লীল দৃশ্য, সংলাপ এমনকি বিতর্কিত নানা বিষয়ের কারণে সেন্সরে আটকে যায় অনেক সিনেমা। তারমধ্যে কিছু নিষিদ্ধ ছবি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে রেখে যায়। বলিউডে বেশ কয়েকটি সিনেমা সামাজিকভাবে বিতর্কের ঝড় তোলায় ভারতীয় সেন্সর বোর্ডের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল। কিন্তু সেই সিনেমাগুলো আজও মানুষের মনে রয়ে গেছে। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কোনো কোনো সিনেমা আবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মাইলস্টোন হয়ে গেছে। জেনে নিন এমন কিছু নিষিদ্ধ সিনেমার কথা।
* সিনস: কেরলের এর যাজক এক মহিলার প্রেমে পড়েন ও তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়, এই গল্প নিয়ে তৈরি সিনেমা সিনস নিয়ে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষোভ দেখান। সিনেমায় যৌন দৃশ্য দেখানোয় সিনসকে নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
* ব্ল্যাক ফ্রাইডে: ১৯৯৩ মুম্বই বিস্ফোরণের ওপর তৈরি অনুরাগ কাশ্যপের এই সিনেমাটির মুক্তি আটকে যায় ২০০৩ সালে। এখনও এই নিয়ে মামলা চলায় সিনেমাটি মুক্তি পায়নি।
* পাঞ্চ: যোশী-অভয়ঙ্কর সিরিয়াল মার্ডারের ঘটনার প্রেক্ষাপটে ২০০৩ সালে নির্মিত হয়েছিল পাঞ্চ। অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত এই সিনেমাটি অতিরিক্ত হিংসা, ড্রাগ এবং অশ্রাব্য ভাষার ব্যবহারের জন্য নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
* দ্য পিঙ্ক মিরর: বিদেশের বহু ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সমাদৃত এই সিনেমাটি ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামী পুরুষদের গল্প নিয়ে তৈরি। বলিউডে এই সিনেমা মুক্তি পায়নি।
* ফায়ার: হিন্দু পরিবারে দুই জা’য়ের মধ্যে গড়ে ওঠা সমকামী সম্পর্ক নিয়ে তৈরি দীপা মেহতার এই সিনেমা নিয়ে তীব্র বিতর্ক বাঁধায় শিবসেনা। ১৯৯৬ সালে শাবানা আজমি এবং নন্দিতা দাস অভিনীত এই সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ করে সেন্সর বোর্ড।
* ব্যানডিট কুইন: ১৯৯৪ সালে তৈরি শেখর কাপুরের এই সিনেমা ডাকাতরানি ফুলনদেবীর জীবনের ওপর নির্দেশিত। যৌন দৃশ্য ও অশ্লীল ডায়লগ থাকায় সিনেমাটির মুক্তি আটকে দেয় সেন্সর বোর্ড।
* কিসসা কুরসি কা: বলিউডের বিতর্কিত সিনেমাগুলোর মধ্যে কিসসা কুরসি কা অন্যতম। শাবানা আজমি এবং রাজ বাব্বর অভিনীত এই সিনেমা বলিউডে নিষিদ্ধ করেছিল সেন্সর বোর্ড। সিনেমার পরিচালক অমৃত নাহাতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে, তিনি এই সিনেমায় ইন্দিরা গান্ধী এবং তার ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরেছেন। ইন্দিরা গান্ধী যখন জরুরি অবস্থা জারি করেন তখন সিনেমাটি রিলিজ হয়। ক্ষুব্ধ কংগ্রেস সরকার সেন্সর বোর্ডকে নির্দেশ দেয় সিনেমার সব কপি নষ্ট করে দেওয়ার জন্য। গুরগাঁওয়ের কিছু জায়গায় সিনেমার কপি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
* উরফ প্রফেসর: শরমন যোশী, অন্তরা মালি অভিনীত এই সিনেমাটিতে উত্তেজক দৃশ্য ও অশ্লীল ডায়লগ থাকায় তা মুক্তি পায়নি।
* কামসূত্র: মীরা নায়ারের পরিচালনায় তৈরি ১৯৯৬ সালের এই সিনেমাটির গল্প ষোড়শ শতকের। যৌন দৃশ্যে ভরপুর এই সিনেমা সেন্সরের নিষেধাজ্ঞায় কোনো হলে মুক্তি পায়নি।
* আনফ্রিডম: এ বছর মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও ‘লেসবিয়ান’ বা সমকামী প্রেমীদের গল্প ও ইসলামি মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদ নিয়েও বক্তব্য রাখা সিনেমাটিকে বলিউডে আটকে দেওয়া হয়েছে।
* ডেজড ইন দুন: রত্না পাঠক শাহের পরিচালনায় তৈরি ২০১০ সালের এই সিনেমাটি দুন স্কুলে পড়া একটি ছেলের গল্প। সিনেমাটি নিয়ে দুন স্কুল আপত্তি জানালে মুক্তি আটকে যায়।
* ইনশাল্লাহ ফুটবল: ২০১০ সালের এই সিনেমাটিতে এক কাশ্মীরি কিশোরের কথা বলা হয়েছে যার পিতা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে অভিযুক্ত। পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলে ছেলেটির ওপর কীভাবে আঘাত নেমে আসে তা দেখানো হয়েছে এই সিনেমায়। তবে সেন্সর বোর্ড মুক্তি আটকে দেয় সিনেমাটির।
* ওয়াটার: পরিচালক দীপা মেহতার সিনেমা ওয়াটার-এর মুক্তি আটকে দেয় সেন্সর বোর্ড। নারী বিদ্বেষ ও সমাজ থেকে গণভোটে বহিঃষ্কার, এই বিতর্কিত বিষয়গুলি নিয়েই তৈরি এই সিনেমায় অভিনয় করেন জন আব্রাহাম ও লিসা রায়।
* পারজানিয়া: গুজরাট দাঙ্গায় হারিয়ে যাওয়া বালক আজহারকে নিয়ে গড়ে ওঠা এই সিনেমাটি দিনের আলো দেখেনি। গুজরাট সরকার সিনেমাটির স্ক্রিনিং নিষিদ্ধ করে।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ জুন ২০১৫/ এস আহমেদ