এই সিনেমার গল্প সম্বন্ধে কিছু বলব না। বলব শুটিং এর পেছনের কিছু গল্প, কিছু ভালোবাসার কথা, যা আপনারা পর্দায় দেখবেন না।
সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে পোড়ামন-২ এর পরিচালক টিম শেষে পছন্দ মত লোকেশন পেল মেহেরপুরে। সুন্দর সবুজে ঘেরা একটি ছোট গ্রাম, যার পাশ দিয়ে ছোট্ট একটি নদী বয়ে গেছে।
যাই হোক, পোড়ামন-২ এর পরীর জন্য একটি জমিদার টাইপ বাড়ি দরকার । খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেল, এক মেম্বারের বাড়ি, বাড়ির মালিক ইভান ভাই। সামনে পুরানো দিনের এক জমিদার বাড়ি, কিন্তু উনারা এখন ওই বাড়িতে থাকেন না। বাড়ি খালি থাকে, জমিদার বাড়িরই পেছনে আরেকটা বাড়ি বানিয়ে ওখানে থাকেন। আমরা চাইতেই উনি দিয়ে দিলেন। টাকা দিলে উনি টাকা নিতে চাইলেন না। আমাদের বিনা পয়সায় উনার বাড়ি দিলেন ১৫ দিনের জন্য। আমরা সম্পূর্ণ বাড়ি ঘসে মেঝে রং করে নতুন এক রূপ দিলাম।
বাড়ি তো হল, এই বাড়ির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পুরানো দিনের আসবাব পত্র কোথায় পাবো? এটা তো বাজারে কিনতে পাওয়া যাবে না! এগিয়ে এলো, মেহেরপুরের লোকজন, উনারা বিভিন্ন বাসা থেকে নিজেদের ব্যবহারের আসবাব পত্র এনে দিল। খাট, ঘড়ি, চেয়ার টেবিল থেকে শুরু করে সব।
শুরু হল, শুটিং। হাজার হাজার লোক চলে এসেছে শুটিং দেখতে। নায়ক নায়িকা দেখতে। মজার ব্যাপার হল, ইভান মেম্বাররা ২ ভাই, দুই ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন চলে এসেছে উনাদের বাড়িতে। বাড়িতে থেকে শুটিং দেখবে। এছাড়াও আরও কিছু মেহমান থাকার জন্য হাজির। অর্থাৎ ইভান মেম্বারের বাড়ি মেহমান এ গিজগিজ। এই মেহমানরা যাবে না। যতদিন শুটিং চলবে ততদিন থাকবে ।
তারপরও একবারও উনাদের বিরক্ত হতে দেখিনি আমাদের উপর। হাজার হাজার মানুষ, কিন্তু আমাদের শুটিং এর জন্য কোন সমস্যা হয়নি, বরং যখন অনেক লোক দরকার শুটিংয়ের জন্য, আমাদের খুব সুবিধা হয়। মেহেরপুরের মানুষ অসম্ভব ভালো এবং ভদ্র। সরে যেতে বললে সরে যায়, সাহায্য চাইলেই পেয়ে যাই। আমরা বাংলাদেশের অনেক এলাকায় শুটিং করেছি, কিন্তু মেহেরপুরের মত এতো আরামে শুটিং আর কোথাও করতে পারিনি।
শুধু এলাকার মানুষই নয়, চেয়ারম্যান, মেয়র, এসপি, ডিসি স্থানীয় থানা সবাই খুব সাহায্য করেছে। মেহেরপুরের ভালোবাসা আমাদের চিরঋণী করে রাখল।
লেখক : জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধর
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)