বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আসলে কতটা ভয়াবহ? বিদেশে বসে অনলাইনে পত্র-পত্রিকা পড়ে ঠিক বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশি লেখক শামিম আহমেদ আইসিসিডিআরবিতে কর্মরত তার পুরোনো সহকর্মীদের বরাতে জানিয়েছেন- আইসিসিডিআরবিতে রোগীদের জায়গা হচ্ছে না। আরও কিছু হাসপাতালেরও একই চিত্র। রোগী ভর্তি করার মতো অবস্থা যদি হাসপাতালের না থাকে- তাহলে পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ তা তো সহজেই অনুমেয়। কিন্তু এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে তেমন একটা আলাপ হচ্ছে কি? না কি হচ্ছে ঠিকই আমিই শুনতে পাচ্ছি না। হতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য ডেঙ্গু নতুন নয়, কিন্তু এবারের মতো অবস্থা না কি আগে আর কখনোই হয়নি। ডেঙ্গুতে মানুষ মরছে, ডেঙ্গুতে মানুষ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না- হাসপাতালে স্থানের অপ্রতুলতার কারণে- উন্নয়নের জমানায়- এও আরেক বাস্তবতা। আরও বাস্তবতা হচ্ছে- প্রিয়া, মিন্নিরা আলোচনায় যতটা এটেনশন পায়- ডেঙ্গু যেন সে রকম এটেনশনও পেতে পারে না।
মশা নিধনের ব্যাপারে সিটির ব্যর্থতা আছে, আছে সীমাহীন উদাসীনতাও। কিন্তু আইসিসিডিআরবির গবেষণায় ‘মশার ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়েছ' বলে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা না নেয়া, কার্যকর ওষুধের যোগান নিশ্চিত না করা দুই সিটি কর্তপক্ষের ‘ক্রিমিনাল নেগলিজেন্স’। কিন্তু এই ‘ক্রিমিনাল নেগরিজেন্স’ নিয়ে কোথাও কোনো আলাপ কিন্তু নেই। অথচ দুই সিটির এই ক্রিমিনাল নেগলিজেন্সের বিরুদ্ধেই নগরবাসীর ফুঁসে ওঠার কথা।
বিজ্ঞানীদের গবেষণার, পরামর্শের দিকে মনোযোগ দিলে, সেগুলোকে গুরুত্ব দিলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম হলে হতেও পারতো। সিটি সেটি করেনি বলেই এতোগুলো লোক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, মানুষ মরেছে। এই মৃত্যুর দায় ভাগ কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের, দুই মেয়রেরও।
কেউ কেউ মিনমিন করে ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ‘মহামারি’ হিসেবে ঘোষণার দেয়ার আলাপ তুলেছেন। এই আলাপটা বোধ হয় আরও জোড়েই তোলার সময় হয়ে গেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে জায়গা না পেলে সেটি তো অবশ্যই মহামারি পরিস্থিতি। কিন্তু রাষ্ট্র তথা সরকার পরিস্থিতিকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে কী না- সেটা আমরা কিভাবে বুঝবো?
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/২৪ জুলাই, ২০১৯/আরাফাত