শনিবার, ১০ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের বৈঠকে স্থান পাবে জ্বলন্ত সব ইস্যু

হঠাৎ বেড়ে যাওয়া গুম, খুনসহ নানান বিতর্কিত ইস্যু সামনে রেখে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বুধবার বিকালে গণভবনে বসবে এ বৈঠক। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রমতে, বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ব্যাপক আলোচনা হতে পারে এ বৈঠকে। দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এই প্রথম সরকার ও দল ঘিরে হাইকমান্ড অনেকটা বিব্রত। নারায়ণগঞ্জের অপহরণের ঘটনায় সারা দেশে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দলের মধ্যে যখন পরস্পরবিরোধী অবস্থান- সে মুহূর্তে কার্যনির্বাহী কমিটির এ সভায় বেরিয়ে আসবে নানামুখী বিশ্লেষণ। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ ও সারা দেশে গুম-খুনে সরকারের সমালোচনার জবাবে দলের অবস্থান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সহযোগিতা চাইবেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে চান। ঘটনার সঙ্গে দলীয় কোনো নেতার সংশ্লিষ্টতা পেলে ছাড় দেবেন না একচুল। দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর হঠাৎ গুম-খুন বেড়ে যাওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ। সারা দেশে নেতা-কর্মীরাও এ গুম-খুনের শিকার হচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের সাত অপহরণ ও খুনের ঘটনায় প্রকৃত দোষী এখনো চিহ্নিত হয়নি। খুন-গুম-অপহরণ নিয়ে রাজনীতিতে চলছে দোষ চাপানোর পুরনো ব্লেমগেম। সরকার মনে করছে, নিহত সবাই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। তাই এ ঘটনায় তৃতীয় পক্ষ বিএনপি-জামায়াত জোট জড়িত থাকতে পারে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এটা আওয়ামী লীগই করেছে। এ নিয়ে তৃণমূলে তোপের মুখে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সরকার ও দলে বর্তমানে বিব্রতকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনুষ্ঠেয় কার্যনির্বাহী সভায় এ বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দলের সিনিয়র নেতাদের মতামত চাইবেন প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তৃণমূল আওয়ামী লীগের সমন্বয় করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড কীভাব জোরাল করা যায়, সে বিষয়ও আলোচনা হবে। এ ছাড়া বিএনপি জোটের সম্ভাব্য আন্দোলন কর্মসূচি মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ে দলকে আরও গতিশীল করতে দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। দলীয় সূত্র জানায়, মাত্র চার মাসের মাথায় সরকারের যেসব মন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে তাদের নিয়েও আলোচনা হবে দলে। আবার অনেকে নানান ইস্যু নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদেরও সতর্ক করা হবে কড়া ভাষায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যারা সাংগঠনিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন তাদের কাজের জবাব চাইবেন দলীয় সভানেত্রী। এ ছাড়া দলের নাম ভাঙিয়ে যারা সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন তাদের ব্যাপারেও শেখ হাসিনার মনোভাব কঠোর বলে জানা গেছে। নানা সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে আগামী বুধবারের বৈঠক। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি, সাংগঠনিক অবস্থা, তৃণমূল ঢেলে সাজানোসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হবে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এজেন্ডায় থাকে না। তবে বৈঠকে বসলে আলোচনা হতেই পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বুধবারের বৈঠকে সারা দেশে তৃণমূলকে সংগঠিত করা, নিজেদের কোন্দলের কারণে বিরোধী পক্ষকে আন্দোলনের অস্ত্র তুলে দেওয়া, সরকারকে বেকায়দায় ফেলা ইত্যাদি বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিতে পারেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর