বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, নিজের বাড়ি সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। সেই ঘরে নিরাপত্তা না থাকলে জনগণ কোথায় যাবে? সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে এসব অপকর্ম করেই যাবে। মানুষ এসব ভালো চোখে দেখছে না। জনগণের নিরাপত্তাবিধানের দায়িত্ব সরকারের। যে কোনো মূল্যে জনগণের নিরাপত্তা সরকারকে নিশ্চিত করতেই হবে। গতকাল জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অত্যন্ত কঠোরতার সঙ্গে মাওলানা ফারুকী হত্যাকাণ্ড, মগবাজারের তিন হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে রওশন এরশাদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি হঠাৎ করেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের খতিব, টিভি উপস্থাপক ফারুকী বাড়িতে খুন হলেন; এক দিন পর মগবাজারে একটি বাড়িতে তিনটি খুন হলো। বাড়ির মতো নিরাপদ আশ্রয়ে নিরাপদ না হলে মানুষ কোথায় যাবে? আজ নিজের ঘরেও যেন মানুষের নিরাপত্তা নেই। তিনি বলেন, দেশের নানা স্থানে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এসব হতো না। দিনদুপুরে গুলশানে ৪২ লাখ টাকা ছিনতাই হয়ে গেল। এসবের শেষ কোথায় তা আমরা জানতে চাই। জনগণ এসব ভালোভাবে নিচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতির দাবি জানিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, কঠোর হাতে এসব দমন করতে হবে। বিচারপতি অভিশংসনে সংবিধান সংশোধন ও সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নে পৃথক কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কমিশন গঠন করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ নীতিমালাটি প্রণয়ন করা হলে এত সমালোচনা আসত না। সবার সঙ্গে আলোচনা ও মতামত নিয়ে নীতিমালাটি পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা সম্ভব। তাই আলোচনার মাধ্যমে নীতিমালাটি প্রণয়ন করলে তা সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে। তিনি শেরপুর, নেত্রকোনা, জামালপুর ও ময়মনসিংহ জেলাকে নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান। রওশন বলেন, এবার ঈদে মানুষ ভয়ে ভয়ে সেমাই খেয়েছে। কারণ সবকিছুতেই ভেজাল। খাসির মাংসেও ফরমালিন। খাবার নিয়ে মানুষ ভয় ও আতঙ্কে রয়েছে। যেমন করেই হোক এ বিষক্রিয়া থামাতে হবে, মানুষ নির্বিঘ্নে খাবার খেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বন্যায় ১৫ লাখ মানুষ ঘর হারিয়েছে। ত্রাণ অপ্রতুল। ত্রাণ বেশি করে দিতে হবে, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মানুষ মনে করছে সরকার কিছুই করছে না।