অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে সংবিধান সংস্কারের জন্য জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। দলটির নেতারা বলছেন, সরকার সংস্কারের দায়িত্ব এড়িয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে বল ঠেলে দিচ্ছে। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে এনসিপি নেতারা বলছেন, বিএনপিসহ কিছু দলের গণভোটের সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক না করার অবস্থান জনগণের রায়ের প্রতি প্রতারণা। গতকাল রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির দাবি জানিয়ে আখতার হোসেন বলেন, আমরা অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে খেয়াল করছি সংস্কারের প্রস্তাবনাগুলোকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা হয়নি। সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আবারও সংস্কারের বিষয়টিকে সরকারের দায়িত্ব হিসেবে সম্পন্ন না করে রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সরকার সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে নিজেরা উদ্যোগী না হয়ে বরং গা বাঁচানোর মনোভাব ব্যক্ত করছেন। আমরা এর মধ্য দিয়ে সংস্কারকে বানচাল করে নির্বাচনকেও বানচালের দিকে নিয়ে যাওয়ার এক ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করছি। ঐকমত্য কমিশনের যে সুপারিশ সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে সেই প্রস্তাবনা-১ অনুযায়ী অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের বিষয়গুলোকে প্রধান রেখে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে আদেশ সেটা জারি করার আমরা দাবি জানাচ্ছি।
আখতার হোসেন বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা সামনের সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। তারা আসলে সংস্কার থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবেই সংস্কার ভন্ডুল হয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে একাত্ম হবে না।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ঐকমত্য কমিশনে দুটি ভাগ ছিল। একটা হলো সবাই যেটাতে ঐকমত্য হয়েছে। আর অন্যটি নোট অব ডিসেন্ট, যা ছিল দলীয় মতামত। দলীয় মতামত গণভোটে যাওয়া উচিত না। সবাই যেটাতে ঐকমত্য হয়েছে সেটাই গণভোটে যেতে হবে।
সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি আপনারা স্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করেন যে, কোন দিন সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করবেন। এই আদেশটা অবশ্যই ড. ইউনূসকে জারি করতে হবে।