শিরোনাম
শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিকল্প জোট গড়তে চায় জাতীয় পার্টি

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে নতুন প্লাটফরম তৈরির উদ্দেশ্যেই দলটি এ উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এ জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে। জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ খবর পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপিকে ঠেকাতে এইচএম এরশাদের এটি একটি নতুন রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। দলীয় নেতারা জানান, ১০ থেকে ১২টি দল নিয়ে এ জোট গঠন হবে। এর মধ্যে কয়েকটি নিবন্ধিত দলও থাকবে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের শরিক দুটি দলের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা চলছে। এর বাইরে কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গেও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ ইতিমধ্যে নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য, জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের আগামীতে সরকার গঠন করা। সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ১০ থেকে ১২টি দল নিয়ে আমাদের জোট হতে পারে। এখনই দলগুলোর নাম প্রকাশ করা ঠিক হবে না। তবে এরই মধ্যে কয়েকটি ইসলামী দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা হবে। জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠ গরম করতে চান এরশাদ। ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত সব কটি নির্বাচনে এরশাদ কিংবা তার দল বরাবরই অন্য দলগুলোর ক্ষমতাসীন হওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না— এমনই মত অনেকের। বিষয়টি বুঝতে পারছেন এরশাদও। তাই দল পুনর্গঠন এবং জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট গঠনে উঠেপড়ে লেগেছেন সাবেক এই সেনাশাসক। এরশাদ তার দলকে বিএনপির বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনকে জীবনের ‘শেষ’ নির্বাচন হিসেবে দেখছেন তিনি। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়ারও অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন এরশাদ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জাতীয় পার্টিকে বিএনপির বিকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে এরশাদ ও রওশন একমত হয়েছেন। তারা দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। জানা যায়, দীর্ঘ সময় মহাজোটে থেকে দুর্বল হয়ে পড়া জাতীয় পার্টিকে চাঙ্গা করতে পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ নানান কর্মসূচি নিচ্ছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে নতুন করে পথ চলতে চায় দলটি। পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়োজনে তরুণ ও উদ্যমী নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে দেশব্যাপী সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করবেন। এ ছাড়া  যারা দল থেকে বেরিয়ে গেছেন অথবা বহিষ্কার হয়েছেন; তাদের আবারও দলে ভেড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুর্বল সংসদীয় এলাকায় দলকে সংগঠিত করার কার্যক্রমও শুরু করা হবে। এবার নির্বাচনে একটি বড় প্রভাব ফেলতে চায় জাতীয় পার্টি। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এরশাদের নেতৃত্বে যে নতুন নির্বাচনী জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে  মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, উদার গণতান্ত্রিক, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী, সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থাকবে। কোনো প্যাডসর্বস্ব, অস্তিত্বহীন রাজনৈতিক দল এই জোটে থাকবে না। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ বলেন, মানুষ এখন এরশাদের শাসনামলে ফিরে যেতে চায়। তাই আমরাও চাচ্ছি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সংগঠিত করতে।

সর্বশেষ খবর