শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপি মানি না মানব না বাঁশি বাজাবেই

নওগাঁ প্রতিনিধি

বিএনপি মানি না মানব না বাঁশি বাজাবেই

দশম সংসদ নির্বাচনের মতো আগামী নির্বাচনও বর্জন করলে বিএনপির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। তিনি মনে করেন, বিএনপি এখন যাই বলুক না কেন, তারা শেষ পর্যন্ত ভোটে আসবে। গতকাল দুপুরে নওগাঁয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল জলিলের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় অংশ নেওয়ার আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এরপর মন্ত্রী প্রয়াত নেতা আবদুল জলিলের কবর জিয়ারত করে স্মরণসভায় যোগ দেন। নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় সংসদের হুইপ শহিদুজ্জামান সরকার এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি, ইসরাফিল আলম এমপি, সলিম উদ্দিন তরফদার এমপি, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একিউএম ওয়াহিদুজ্জামান খান বাদশাহ, নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহম্মেদ শিষান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খোদাদাদ খান পিটু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুখ সুমন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়। এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোটের আগ পর্যন্ত মানি না, মানব না বাঁশি বিএনপি বাজাবেই। এটা তাদের জন্মগত অভ্যাস। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। এখন দৃশ্যত আগের দাবি থেকে সরে এসেছে। এখন বিএনপি নেতারা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে বক্তব্য দিচ্ছেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের দাবি না মানলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বড় দল হিসেবে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্বই বিপন্ন হবে। এদিকে নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মাননীয় রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর সার্চ কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত তালিকা থেকে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। তারপরও বিএনপি বিষোদগার করছে। এক্ষেত্রে তিনি বিএনপিকে বাংলাদেশ নালিশ পার্টি বলে উল্লেখ করেন।

ওবায়দুল কাদের এমপি প্রয়াত নেতা আবদুল জলিলের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাংগঠনিক, মানব দরদি এবং বিনয়ী। তাকে নওগাঁর মানুষ যে কত ভালোবাসেন এই স্মরণসভায় হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল দেখে তাই প্রমাণ করে। তা না হলে এই প্রখর রোদের মধ্যে দুঃসহ গরম সহ্য করে এত মানুষ মাঠে বসে থাকতে পারত না। মৃত্যুর পরও মানুষ তাকে হৃদয়ের মাঝখানে রেখেছেন। আবদুল জলিলের আদর্শ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, অন্যের জমি দখল করে, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে মানুষের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। তৃণমূল কর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে নেতা-কর্মীদের ইচ্ছামতো পকেট কমিটি গঠন করতে দেওয়া হবে না। দল যখন ক্ষমতায় থাকে তখন কিছু মৌসুমি পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে আসে। বসন্তের এসব কোকিলের চাপে আসল কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ক্ষমতা চলে গেলে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও এসব মৌসুমি পাখির খোঁজ পাওয়া যায় না। নেতাদের এ রকম সিন্ডিকেট করতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। সবকিছুই হবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিগত ৮ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে বিশ্বে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের ১০ জন নেতার মধ্যে নিজেকে একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে ভোটের কোনো ঘাটতি হবে না। মন্ত্রী বলেন নওগাঁ জেলায় ৪২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সান্তাহার হতে নওগাঁ-নওহাটা মোড়-রাজশাহী বিমানবন্দর পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন কার্যক্রম এবং ২০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নওগাঁ-আত্রাই-নাটোর মহাসড়কের অসমাপ্ত কাজ শিগগিরই শুরু হচ্ছে।  এই স্মরণসভায় পাশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নাটোর এবং বগুড়া জেলা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

জরুরি অবতরণ : এদিকে সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বহনকারী হেলিকপ্টার আকাশে ঘন কুয়াশার কারণে সিরাজগঞ্জে জরুরি অবতরণ করে আধা ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউপির ক্ষিরশিং এলাকার একটি আবাদি জমিতে হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিল্লুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তাড়াশ থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। কুয়াশা কেটে গেলে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে হেলিকপ্টারটি আবারও উড্ডয়ন করে মন্ত্রীকে নিয়ে চলে যায়।

সর্বশেষ খবর