শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও আবরার হত্যা

দুই দিনের সমাবেশ কর্মসূচি বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি বাতিল এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামীকাল শনিবার ঢাকাসহ মহানগর সদরে এবং রবিবার জেলা সদরে জনসমাবেশ হবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি বলেন, দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবিতে এবং আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আমরা আগামী শনিবার ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর সদরে এবং রবিবার সব জেলা সদরে জনসমাবেশ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ড. মোশাররফ বলেন, ‘আমরা নিকট প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সমতাভিত্তিক সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু এই সরকার যা করছে তাতে  দেওয়া-নেওয়ার বিষয়ে নেই- আছে শুধু দেওয়ার। দেশের স্বার্থহানিকর এমন অসম চুক্তির অধিকার জনগণ এই সরকারকে  দেয়নি। কাজেই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময়ে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই এবং দেশের ও দেশের স্বার্থহানিকর সব চুক্তি বাতিল চাই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগনের স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তির প্রতিবাদে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে। সচেতন ছাত্রসমাজ আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে। সমালোচনায় ভীত সরকার তার দলীয় লাঠিয়ালদের দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী পোস্ট দেওয়ার জন্য বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে খুন করেছে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকান্ডে  আন্দোলনের আগুন সারা দেশ জ্বলে উঠেছে। কাউকে ভীত করতে পারেনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ফেনী নদী আগে বাংলাদেশেরই নদী ছিল- যৌথ নদী ছিল না। বর্তমান সরকার আরও ৬টি যৌথ নদীর সঙ্গে ফেনী নদীর নাম সংযুক্ত করে একসঙ্গে এসব নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়। এবার ফেনী নদীকে আলাদাভাবে বিবেচনা করে তার পানি ভারতীয় একটি শহরের প্রয়োজনে দেওয়ার চুক্তি হলো। আমাদের পররাষ্ট্র সচিব বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই পানি না দিলে সাবরুম শহর কারবালা হয়ে যেত বলে মন্তব্য করেছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের তো প্রথমে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ দেখার কথা। ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশ বিস্তীর্ণ অঞ্চল খরাক্রান্ত হওয়ায় লাখ লাখ মানুষের আহাজারি তাকে স্পর্শ করেনি। তিনি বলেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের মরুকরণ ও লাখো মানুষের আর্তনাদ ওই সচিবের কানে  পৌঁছেনি। ফেনী নদীতে শুকনা মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদের ক্ষতি, মুহুরী প্রকল্প অকার্যকর হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখেও তিনি ও তার সরকার সাবরুমকে কারবালা হতে না দিতে যতটা উদ্যোগী নিজের দেশের জনগণের আহাজারি, আর্তনাদ ও সর্বনাশ তাদের কাছে ততই মূল্যহীন। এটা কোনো দেশপ্রেমিক ব্যক্তি কিংবা সরকারের অবস্থান হতে পারে না।

সর্বশেষ খবর