সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দেরিতে হলেও মেনন সত্য বলেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেরিতে হলেও মেনন সত্য বলেছেন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেরিতে হলেও রাশেদ খান মেনন সত্য কথা বলেছেন। ওই নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। এ সত্য কথা বলার জন্য ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে নিজের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফ্রন্টের সমাবেশের অনুমতি প্রদানের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এদিকে বৈঠক শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে দেখতে যাবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোটের নেতারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। তবে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাদের এই সাক্ষাতের বিষয়টি নির্ভর করবে সরকারের অনুমতি পাওয়ার ওপর। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঐক্যফ্রন্ট নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, গণফোরামের ড. রেজা কিবরিয়া, নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, নাগরিক ঐক্যের ডা. জাহেদ উর রহমান, মমিনুল ইসলাম, জেএসডির তানিয়া রব ও আবদুল মালেক রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ড. কামাল হোসেন বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর যাদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে তাদেরকে আমি জিজ্ঞেস করেছি আপনারা কেউ ভোট দিতে পেরেছেন কিনা! কিন্তু এমন একজনকেও পাইনি যে কিনা বলেছে- ভোট দিতে পেরেছেন। সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন গতকাল সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয়নি।

এই কথার প্রতিক্রিয়ায় ড. কামাল হোসেন বলেন, অনেক দিন পরে হলেও তিনি সত্য বলেছেন। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, ২২ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সমাবেশের অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি। ২১ তারিখে অনুমতি দিলে পরদিন সমাবেশ করা তো কঠিন কাজ হয়ে যাবে। আমরা তো ঐকমত্যের কথা বলছি, সংঘাতের কথা বলছি না। সুতরাং কেন অনুমতি পাওয়া যাবে না। সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার মানে তো গণতন্ত্র ধ্বংস করা। সংবিধান লঙ্ঘন করা। আ স ম আবদুর রব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমরা যারা দেখা করতে যাব, তাদের নামের তালিকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে দিয়ে আসব। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। তিনি বলেন, অনুমতি পেলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জোটের শীর্ষ নেতারা খালেদা জিয়াকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাবেন।

আগামীকাল ২২ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবরার হত্যার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশের এখনো অনুমতি পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করেন আ স ম রব। তবে ঐক্যফ্রন্ট আশা করছে যে, সরকার এই সমাবেশের অনুমতি দেবে। তা না হলে পরবর্তীতে অন্য কর্মসূচি নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। আ স ম রব আরও জানান, এই সরকারের আমলে বুয়েটের ছাত্র আবরারসহ আরও যেসব হত্যাকা  ঘটেছে, তার বিচারের দাবিতে ঐক্যফ্রন্ট রক্তাক্ষরে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করবে। তারপর তা জাতিসংঘসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদিকে ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত বিএনপিতে নতুন উদ্যম তৈরি করবে বলেও দলটির অনেক নেতা মনে করছেন। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী যে প্রশ্ন ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছিল, তা কেটে যাবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বশীল নেতাদের প্রত্যাশা, কামাল হোসেন বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে এসে আইনি বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবেন। গত বছর গ্রেফতারের পর বিএনপি নেতারা ড. কামাল হোসেনের কাছে আইনি সহায়তা চেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, তিনি রায় পড়ে পরামর্শ দেবেন। ঐক্যফ্রন্টের একজন সিনিয়র নেতা জানান, এই সাক্ষাতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কামাল হোসেনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে তার সবকিছু নির্ভর করছে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া ও এই বিষয়টিকে সরকার কীভাবে দেখছে- তার ওপর।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর