সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের রুল

শিশু ধর্ষণের শাস্তি কেন মৃত্যুদন্ড নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিশু ধর্ষণের শাস্তি কেন মৃত্যুদন্ড নয়- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। গতকাল দুটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্টের আলাদা দুটি বেঞ্চ পৃথক আদেশ দিয়েছে। আদালত রুল জারির  পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনাও দিয়েছে। আদালতের জারি করা রুলে-ভিকটিমের বয়স ১৬ বছর বা তার নিচে হলে সেক্ষেত্রে ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে আইন করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, ধর্ষণ মামলার বিচারের জন্য আলাদা আদালত গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া  হয়েছে। এছাড়া ধর্ষকের ডিএনএ ডাটাবেজ তৈরি করে তা সংরক্ষণ করতে  কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, প্রতিটি জেলায় ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের মাধ্যমে ভিকটিমকে সহায়তা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, ভিকটিমের ছবি গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশের ক্ষেত্রে কেন সতর্কতা অবলম্বন করা হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন, স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র ও মহিলা বিষয়ক সচিব, পুলিশের আইজিসহ মামলার সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সারা দেশে ধর্ষণ প্রতিরোধ ও ভিকটিমকে সহায়তা দিতে একমাসের মধ্যে একটি কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে ধর্ষণ ঠেকাতে এন্টি রেপ ডিভাইসের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় জরুরি সেবাকে (৯৯৯) সংযুক্ত করতে আইসিটি সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে।

ধর্ষণ প্রতিরোধ ও ভিকটিমকে (ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশু) সহায়তা দিতে কমিশন গঠনের বিষয়ে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ আদেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার এম এস কাউসারের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেওয়া হয়। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার ড. রাবেয়া ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

আইন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনে বিচারক, মানবাধিকার কর্মী, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নিয়োজিত চিকিৎসক, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, সমাজের বিশিষ্ট নাগরিককে রাখতে বলা হয়েছে। ধর্ষণের মূল কারণ উদঘাটন ও তা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ তৈরি করে ৬ মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ(সিসিবি)ফাউন্ডেশনের পক্ষে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের করা এক রিট আবেদনে এন্টি রেপ ডিভাইস জাতীয় জরুরি সেবার (৯৯৯) সঙ্গে সংযুক্তকরণ সংক্রান্ত কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন অধ্যাপককে রাখতে বলা হয়েছে। রিট আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মো. আবদুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

এই আদালতের জারি করা রুলে ধর্ষণ থেকে নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এন্টি রেপ ডিভাইসটি সবার কাছে পরিচিত করে তা সহজলভ্য করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ, আইন, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিবসহ ১২ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর