অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, খুব শিগগিরই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে সরকারি সাত কোম্পানি। আমাদের শেয়ারবাজারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। এখানে যারা আছে তারা বিক্ষিপ্তভাবে আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজিবাজারে আসতে হবে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে অর্থমন্ত্রীর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে এসব কোম্পানি প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোকে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে তারা তাদের সম্পদের পরিমাণ যাচাই করে জানাবেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজার চাঙ্গা করতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ারজেন লিমিডেট (বিআরপিএল) এবং গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডকে (জিটিসিএল) শেয়ারবাজারে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজারকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা উচিত। পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করার জন্য আজ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাতটি কোম্পানিরই ব্যালেন্সশিট এখন এস্টেট করতে হবে। তাদের এস্টেট রিভ্যালু করার জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এর ভিত্তিতেই শেয়ারগুলোর ভ্যালুয়েশন হবে। এরপর এসব কোম্পানির ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসব। আগামী দুই মাসের মধ্যে তারা আমাদের অ্যাসেসমেন্ট করে রিপোর্ট দেবে। আমরা তাড়াতাড়ি কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনতে চাই, তাই সাতটি ফার্ম দিয়ে অ্যাসেসমেন্টের কাজটা দ্রুত শেষ করতে চাই।
৪২৫ কোটি ডলার অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিল উন্নয়ন সহযোগীরা : সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (বিডিএফ) সম্মেলনে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে সোয়া ৪ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি ডলারের অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সাধারণত এ ধরনের সম্মেলনে কেউ অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় না। তবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর সম্মানে তারা এ অঙ্গীকার করেছে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অর্থমন্ত্রীর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, ২৯ থেকে ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।অর্থমন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ডলার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আগামী চার বছরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। এ অর্থ ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে দেবেন তারা।
তিনি বলেন, এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে দুটি চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ও একটি নতুন প্রকল্পে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব অর্থ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় হবে। এ ছাড়া এই ফোরামে জাইকা ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ২৭০ কোটি ডলার ঋণ দেবে। এ ঋণ দিয়ে ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে আপনি বিশ্বব্যাংককে বলেছিলেন রোহিঙ্গাদের জন্য কোনো অর্থ সহায়তা নয়, তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তারপরও তাদের অনুদান নেওয়া হচ্ছে- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের ফিরিয়ে দিতে চাই। তবে রাতারাতি তো ফিরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যতদিন না ফিরছে ততদিন তাদের সহায়তা দিতে হবে। তাই এসব অনুদান নেওয়া হচ্ছে।