ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আত্মপরিচয় জানতে পেরেছে আবেগপ্রবণ ও কবিতাপ্রিয় বাঙালি জাতি। ভাষা আন্দোলন বাংলা সাহিত্যের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। একুশের জাগরণ না ঘটলে বাংলাদেশের সাহিত্যে এত তাড়াতাড়ি সমৃদ্ধি ঘটত না। আন্দোলন, মিছিল, প্রতিবাদ বাংলা কবিতায় দিয়েছে এক নতুন রং, জীবনের গন্ধ। নবীন লেখকরা, নবীন কবিরা আমাদের কবিতাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে। আরও রূপময় করে তুলবে বলে বিশ্বাস করি। আমাদের কবিতার মূল ধারাটি গণআন্দোলন, মিছিল, প্রতিবাদের উষ্ণ সাহচর্যে বেড়ে উঠেছে। এতে কবিতা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে এ অঞ্চলের কবিতার আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়েছে। এ মাসটা ভাষার মাস, বইমেলার মাস। এখন কবিতা উৎসবের একটা বিশাল আয়োজন হচ্ছে। ১৯৮৭ সালে শুরু হয়েছিল এ উৎসব। এবারে আমাদের কবিতা উৎসবের সভাপতি সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক তারেক সিরাজ। তাদের যোগ্য পরিচালনায় এবারের উৎসব হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে এ উৎসবটা হচ্ছে এটাও একটা বড় পাওয়া। এই কবিতা উৎসব শুধু উৎসব নয়, এটা ছিল সংগ্রাম।
স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মূল ধারার প্রতিবাদী কবিরা একত্রিত হয়ে তখন জাতীয় কবিতা পরিষদ গড়ে তুলেছিলেন। সোচ্চার প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। এখন তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে কবিতা লিখবে, সাহিত্য রচনা করবে। নবীন কবিরা আমাদের কবিতাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে। তরুণদের জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনা। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির জীবনে অফুরন্ত সম্ভাবনার জগৎ খুলে দিয়েছে। এই জগৎ থেকে আমরা যদি ঐশ্বর্য আহরণ করি তাহলে আমাদের সাহিত্য, শিল্প, জীবন আরও পূর্ণ হবে, বিকশিত হবে। বাঙালি বিশ্বে আরও মর্যাদাশীল এবং গৌরবময় জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এখনই বাঙালি বিশ্বে একটি গৌরবময় জাতি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সবাই সম্মান করে। এই জাতি বিশ্বে তার সম্মানের স্থান পেয়েছে এবং এই সম্মান ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পাবে। আমি এখন তরুণ লেখকদের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমি দেখতে চাই তারা কীভাবে নতুন পথের সন্ধান করছে। সেক্ষেত্রে আমি শিখতে চাই। আমাদের সাহিত্যের সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। যে জাতির ঐতিহ্য যত সমৃদ্ধ, সেই জাতির সভ্যতার বিকাশ তত বেশি ঘটে। তরুণরা নিজেরাই তাদের সাহিত্যের নতুন পথ তৈরি করে নেবে। তাদের পরামর্শ দেওয়ার মতো কিছু আমি খুঁজে পাই না। আমি মনে করি যে জাতির সাহিত্যের এমন সমৃদ্ধ ঐতিহ্য আছে; মাইকেল, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ দাশ আছে; সেই ধারায় আমাদের নবীন লেখকরা, নবীন কবিরা আমাদের কবিতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে। আরও কাব্যময় হয়ে উঠবে আমাদের এই ভাষা। আমি প্রতিনিয়ত তাদের কাছ থেকে শিখছি। আজ গণমাধ্যমে অনেক তরুণ-তরুণী কাজ করছে। টেলিভিশনে, রেডিওতে কাজ করছে। এটাও তো শিল্প। এগুলোও তো ভাষারই কাজ। সংস্কৃতির কাজ। এগুলোর প্রসার ঘটেছে আমাদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এগুলোর মধ্য দিয়ে। নতুন প্রজন্ম এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আজ আমাদের ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। হয়তো জাতিসংঘে এটাকে একটা প্রতিষ্ঠিত ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। সেটাও আশা করছি। এই ভাষার বিকাশ ঘটুক, সাহিত্যের বিকাশ ঘটুক, বাঙালির জয় হোক, বাংলা সাহিত্যের জয় হোক, বাংলা ভাষার জয় হোক। লেখক : একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি। অনুলেখক : শামীম আহমেদ।
শিরোনাম
- সেনাকুঞ্জে বেগম খালেদা জিয়া
- গাইবান্ধা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর
- ৩০ নভেম্বর থেকে ফের কর্মবিরতির ঘোষণা প্রাথমিকের শিক্ষকদের
- ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কন্ট্রোল রুম চালু করলো সরকার
- মেট্রোরেলের ট্র্যাক থেকে অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার
- ‘দেশে ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প, শক্তি হিরোশিমা বোমার সমান’
- ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার গভীর শোক
- ভূমিকম্পে বংশালে নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে
- মাছের বাজার চড়া, মুরগি-ডিমে কিছুটা স্বস্তি
- কাল ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
- ভূমিকম্প নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
- শীতেও বেড়েছে সবজির দাম, যা বলছেন বিক্রেতারা
- টানা বর্ষণে ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যা, ৪১ জনের প্রাণহানি
- ফের উত্তপ্ত নেপাল, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী সুশীলার
- ১৬ বছরের কম বয়সীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করল অস্ট্রেলিয়া
- রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: মার্কিন শান্তি প্রস্তাব মানবে না ইউরোপ
- ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পর শত শত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে
- লঙ্কানদের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেল জিম্বাবুয়ে
- আজ সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া
- বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে ইসির সভা ৩০ নভেম্বর
তরুণরা ভাষাকে কবিতাকে আরও এগিয়ে নেবে
মহাদেব সাহা
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর