রবিবার, ১৭ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা টেস্টিং ল্যাবেও সাপ্তাহিক ছুটি!

মৃত ৩০০ ছাড়াল, আক্রান্ত ২১ হাজার, মারা গেলেন আরও এক পুলিশ সদস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা টেস্টিং ল্যাবেও সাপ্তাহিক ছুটি!

করোনা মহামারীর এই জরুরি সময়েও টেস্টিং ল্যাবে সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে রাজধানীর আটটি ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা গতকাল এ তথ্য জানিয়েছেন। দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি বলেন, আমাদের মোট ৪১টি পিসিআর ল্যাব চালু আছে। আমরা কয়েকটি ল্যাবের ফল পাইনি। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সেখানে নমুনা সংগ্রহ বা পরীক্ষা হয়নি। ঢাকার ২০টি ল্যাবের মধ্যে ১২টি ল্যাবের এবং আর ঢাকার বাইরের ২১টি ল্যাবের তথ্য দেন তিনি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন- এ সময়েও জরুরি সেবার সাপ্তাহিক ছুটি নিতেই হবে? এমারজেন্সি বলে দেশে আর কিছুই থাকল না!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশে প্রথম মৃত্যুর পর দুই মাসের মাথায় আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছাল প্রায় ২১ হাজারে আর মৃত্যু সংখ্যা ছাড়াল ৩০০। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ছয় হাজার ৭৮২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৩০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ হাজার ৯৯৫ জন। আরও ১৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন। ফলে কভিড-১৯ এ দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৪ জন হলো। সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন আরও ২৩৫ জন। সব মিলয়ে এ পর্যন্ত মোট চার হাজার ১৭ জন সুস্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে গতকাল অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে সাতজন ছিলেন ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা। মহানগরের বাইরে ঢাকা জেলার দুজন, চট্টগ্রাম বিভাগের দুজন, রংপুর বিভাগে দুজন, গাজীপুরের একজন, মুন্সীগঞ্জের একজন এবং নরসিংদীতে একজন। বুলেটিনে জানানো হয়, সারা দেশে এখন ৪১টি ল্যাবে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩টি ল্যাবে ছয় হাজার ৭৮২টি নমুনা পরীক্ষার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতর হাতে পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৪৯ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে, সারা দেশে এখন আইসোলেশনে রয়েছেন তিন হাজার ৪৬ জন।

এদিকে সারা দেশের কোথায় কোথায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেন তার সবশেষ খবর জানিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা-

বগুড়া : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তারা সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের নার্স হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করেছেন। কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়নের কর্ণিপাড়া এলাকার ওই নার্স ঢাকা থেকে ৩০ এপ্রিল বগুড়ায় এসেছেন। অপরজন নওগাঁর পতœীতলার বাসিন্দা। তিনি ঢাকা থেকে গত ১২ মে ফিরেছেন। তার দুজনই বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ১৩ মে নার্স হিসেবে যোগ দেন। ১২ মে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ফলাফলে পজিটিভ পাওয়া যায়। এই দুজন নার্সসহ বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত রোগী এখন ৬১ জন। যশোর : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে করোনা পরীক্ষার আগের দুই দিনের ফলাফল শনিবার একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়। এই দুই দিনে যশোর জেলার ৩৯ জনের নমুনা এই জিনোম সেন্টারে পরীক্ষা করা হয়, যার ১৭টিই করোনা পজিটিভ। এ নিয়ে যশোরে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৫-এ। গত দুই মাসে জেলার ১ হাজার ২৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এক সপ্তাহ ধরেই দিনে এক থেকে পাঁচজন করে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছিল। মাঝে মাঝে শনাক্তের সংখ্যা শূন্যও হচ্ছিল। কিন্তু গত দুই দিনে ১৭ জনের নমুনায় কভিড-১৯ ধরা পড়ল। এদিকে যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারে যশোর ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার বেশ কিছু নমুনার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। যবিপ্রবির এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানান, গত দুই দিনে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৮টি নমুনাই করোনা পজিটিভ। আর একই সময়ে ঝিনাইদহ জেলায় তিনজনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ গত দুই দিনে এ ল্যাবে যশোর, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে ৫৬ জনের নমুনায় করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক এবং ঘিওরের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ আট জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সাটুরিয়া উপজেলায় পাঁচজন এবং ঘিওর উপজেলার এক নারীসহ তিনজন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত  হলেন ৪০ জন। রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : রূপগঞ্জে নতুন করে আরও ১৮ জন (কভিড-১৯) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. সাঈদ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩০ জন। দিনাজপুর : দিনাজপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিভাগের এক চিকিৎসকসহ নতুন ১৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নয়জন পুরুষ ও চার নারী। কয়েক দিন আগে তারা ঢাকা থেকে এসেছেন। এ নিয়ে দিনাজপুরে করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭১ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৫২, নারী ১৬ ও শিশু তিনজন রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা : জেলায় নতুন করে এক দিনে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন চিকিৎসকসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ জন। সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গতকাল সকালে আসা প্রতিবেদন অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৭ জন। এর আগে শুক্রবার রাতে আটজনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তাদের মধ্যে আছেন দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন চিকিৎসক। আক্রান্ত অন্যরা জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। কুমিল্লা : নগরীতে চিকিৎসকের বাবা ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ কুমিল্লা জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬৪ জনে। নগরীর অন্য চারজন আক্রান্ত হলেন- হাউজিং এস্টেটে দুজন এবং নেউরায় দুজন। শনিবার করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কুমিল্লা জেলা কমিটির সমন্বয়ক ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে আরও রয়েছে লাকসাম উপজেলায় একজন ডিম ব্যবসায়ী, মুরাদনগরে একজন, ব্রাক্ষণপাড়ায় দুজন, আদর্শ সদরের তিনজন এবং নাঙ্গলকোটে তিনজন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন মনোহরগঞ্জের একজন। মারা গেছেন দেবিদ্বারের একজন। ফেনী : জেলায় নতুন করে আরও দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ফেনীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৮। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আক্রান্তদের মধ্যে একজন (৪৫) ফেনী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মচারী। তিনি ফেনী শহরে থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। অপরজনের (৪৫) বাড়ি ফেনীর সদর উপজেলার কাজিরবাগে। তিনি পরশুরাম উপজেলার ভূমি অফিসের কর্মকর্তা। আক্রান্তদের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ১১ জন, দাগনভূঞার পাঁচজন, ফুলগাজীর দুজন, ছাগলনাইয়ার আটজন, সোনাগাজীর দুজন ও অনান্য দুজন। লালমনিরহাট : জেলায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন আক্রান্ত হয়েছে ছয়জন। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন চারজন। লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাড়া প্রতিটি উপজেলায় করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে।

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সহকারী মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি দেবিদ্বার পৌর এলাকার বড় আলমপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম (৭২)। করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার একদিন পর শনিবার তিনি তার নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে দেবিদ্বারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ জনে। এদের মধ্যে দু’জনই জীবদ্বশায় জানতে পেরেছেন তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন, বাকি সাতজনই মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেবিদ্বারে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০২ জনে।

লাকসাম(কুমিল্লা) : নাঙ্গলকোটে দুই সহোদরসহ আরও তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাতজনে দাঁড়াল। নতুন আক্রান্ত দুই সহোদরের বাড়ি উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ৪০, অন্যজনের ৩৮। তাদের মধ্যে বড় সহোদর ঢাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে ড্রাইভার পদে এবং অন্যজন ঢাকাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তারা কয়েকদিন আগে পৃথকভাবে বাড়িতে আসার পর করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরে তাদের দুজনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। গতকাল দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো রিপোর্টে তাদের করোনা রিপোর্টে পজিটিভ আসে। এছাড়া নাঙ্গলকোটের জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের পানকরা গ্রামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণ চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসার পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলে করোনা পজিটিভ আসে। নতুন আক্রান্ত তিনজনকে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

উপসর্গ নিয়ে মৃত পুলিশ সদস্য করোনা পজিটিভ ছিলেন : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্ব পালনকালে নিজেই আক্রান্ত হয়ে জীবন দিলেন পুলিশের আরও এক সম্মুখযোদ্ধা। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল মো. নঈমুল হক। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮ জন। গত শুক্রবার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর গতকাল আসা প্রতিবেদনে কভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. সোহেল রানা।

কনস্টেবল নঈমুল হক সিএমপির ট্রাফিক বন্দর বিভাগে কর্মরত  ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেয়াবাদ পীরবাড়ি গ্রামে। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তান এবং বহু আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। সোহেল রানা আরও জানান, করোনাভাইরাস প্রটোকল অনুযায়ী গতকাল রাতে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় মৃতদেহ মরহুমের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।  সেখানে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর