রবিবার, ৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে

মাহমুদ আজহার

মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে

সৈয়দ আবুল মকসুদ

বিশিষ্ট কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি অতি গুরুতর হওয়ার আগেই সরকারকে লকডাউন হোক আর কারফিউ হোক-অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লাখ লাখ রোগীর চিকিৎসা দেওয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের নেই। এটাই আমাদের বাস্তবতা। সে কারণেই স্বাস্থ্য সেক্টরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। করোনা মোকাবিলায় সমন্বয়হীনতা বন্ধ করতে হবে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতার কথা বলা হচ্ছে। সক্ষমতা সব সময় থাকে না, সক্ষমতা তৈরি করতে হয়। আমরা সেই জায়গাই ব্যর্থ হয়েছি। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বয়হীনতার কারণে মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিন যে তথ্য আমরা পাই, তা কতটা নির্ভুল তা নিয়ে মানুষের মধ্যে সংশয় রয়েছে। মানুষের ধারণা, আক্রান্ত আরও অনেক বেশি। মৃতের সংখ্যাও বেশি। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে অনেক মৃত্যুর খবরও স্বাস্থ্য অধিদফতর পর্যন্ত পৌঁছে না। বিশিষ্ট এই বুদ্ধিজীবী বলেন, পশ্চিমের দেশগুলোর পরিস্থিতি এক। আর আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় পরিস্থিতি অনেকটা ভিন্ন। উপমহাদেশে বাংলাদেশের অবস্থা অতি উদ্বেগজনক। করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর হারও পাকিস্তানের চেয়ে কিছুটা কম বলা হচ্ছে সরকার থেকে। সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে বহু লেখালেখি হয়েছে। তদন্ত করেছে। সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেছে। অপরাধী শনাক্তও হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যে শাস্তি প্রাপ্য তা তাদের দেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে দুর্নীতি কমেনি। দুর্নীতি কম হলে জিডিপির এক শতাংশ বরাদ্দ দিয়েও মানুষকে আরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যেত। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য খাতে বিপর্যয় ঘটেছে। এ জন্য আজকে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিভাগ জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না। তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আছে, তারা এতদিন বিপুল পরিমাণ অর্থবাণিজ্য করেছে। কিন্তু করোনা দুর্যোগের সময় তাদের ভূমিকা হতাশাজনক। তারা এখন সাধারণ রোগীদেরও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন না। এ বিষয়টি সরকারের গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-সংখ্যার দিক থেকে খুব একটা কম নয়। যদি উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে পরিস্থিতির অবনতি অনেকাংশে রোধ করা যাবে। বর্তমানে করোনা রোগীর চাপ যতটা আছে, যদি আর না বাড়ে তাহলে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলে চিকিৎসা সেবা মোটামুটি সামাল দেওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

সর্বশেষ খবর