সোমবার, ২৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকায় মামলার স্তূপ

খুলে দেওয়ার পক্ষে আইনজ্ঞরা

আরাফাত মুন্না

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকায় বিচারাধীন মামলার স্তূপ বাড়ছে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। তারা বলেন, সীমিত পরিসরে আদালত চলছে। অধিকাংশ কোর্টই বন্ধ। অপরাধ কিন্তু থেমে নেই। বাড়ছে ফৌজদারি মামলা। আদালত বন্ধ থাকায় বিচারপ্রার্থীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়েছেন, আইনজীবীরাও পড়েছেন আর্থিক সংকটে। আইনজ্ঞদের মতে, শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব না হলেও এখনই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতেই দেশের সব আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম সচল করা উচিত। জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে ভার্চুয়াল বিচার কার্যক্রম চলছে। হাই কোর্ট বিভাগে তা চলছে সীমিত পরিসরে। এ অবস্থায় আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা আলোচিত, চাঞ্চল্যকর ও দুর্নীতি মামলাগুলোর বিচার আটকে গেছে। এসব গুরুত্বপূর্ণ মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সারা দেশের অধস্তন আদালতগুলোর কার্যক্রমও চলছে সীমিত পরিসরে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও সাধারণ আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ থাকায় বিচারাধীন মামলার জট বাড়ছে। একই সঙ্গে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের ভোগান্তিও বাড়ছে। তিনি বলেন, একজন বিচারপ্রার্থী নিজের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে আদালতে আসতে পারছেন না। সীমিত পরিসরে চলছে আদালত। যে কটা বেঞ্চ রয়েছে, তাতেও সব ধরনের এখতিয়ার নেই। রুল শুনানি বন্ধ। আগাম জামিন নেই। মেহেদী বলেন, হাই কোর্টে ৩৫টি পর্যন্ত ভার্চুয়াল বেঞ্চের কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। তাই আমরা সাধারণ আইনজীবী পরিষদের পক্ষে ৩৫টি ভার্চুয়াল ও ১৮টি শারীরিক উপস্থিতির বেঞ্চ নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানিয়েছি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে রয়েছেন। একজন বিচারপ্রার্থী নিজের আইনগত অধিকার নিয়ে হাই কোর্টে আসতে পারছেন না। আগাম জামিন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া যেসব আইনজীবী বেতনভুক্ত নন, তাদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে। তারা আর্থিক অনটনে পড়েছেন। তিনি বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। গত ঈদের আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে ৩০ হাজার টাকা করে প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন আইনজীবীকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, তারা আর্থিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত। কাজল বলেন, দীর্ঘদিন আদালতের কার্যক্রম না থাকায় বিচারাধীন মামলার স্তূপ বাড়ছে।

 আদালত বন্ধ থাকলেও অপরাধ থেমে নেই। ফৌজদারি মামলা বাড়ছে। ফলে মামলার জটও বাড়ছে। সব কিছু বিবেচনা করে দ্রুত ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে হলেও আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম চালু করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর