সোমবার, ১৯ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

এ মুহূর্তে মাসে ২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া জরুরি

মাহমুদ আজহার

এ মুহূর্তে মাসে ২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া জরুরি

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাসে অন্তত ২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের হিসাব অনুযায়ী দুই ডোজ হিসেবে ২৮ কোটি টিকা প্রয়োজন। এর মধ্যে ২ কোটি মানুষকেও এখন টিকা দিতে পারেনি। প্রতি মাসে ২ কোটি করে দিলেও ১৪ মাস সময় প্রয়োজন। তাতেও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভব হলে ছয় মাসের মধ্যেই দেশের ৭০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা উচিত। কিন্তু সরকারের সেই সক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না। তারপরও আমি মনে করি, প্রতি মাসে অন্তত ২ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। আলাপচারিতায় প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন,  দেশে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এ পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে ভয়াবহ এবং উদ্বেগের বিষয়। এ জন্য অনেকাংশে সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিই দায়ী। করোনা আক্রান্ত রোগীদের মাথাপিছু খরচ, স্বাস্থ্যসেবা খাতে খরচের হিসাব, টিকার মূল্যসহ অসংগতিতে ভরা তথ্য প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে। মানুষ চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, এখন হাসপাতালেও কোনো শয্যা খালি নেই। করোনাভাইরাস স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে টিকাই এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে অগ্রাধিকার ‘টিকা সংগ্রহ ও টিকাদান কর্মসূচি’ সম্পর্কে সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নেই। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো ইতিমধ্যে তাদের জনসংখ্যার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে ২টি ডোজ টিকা দিতে সমর্থ হয়েছে। ফলে সেসব দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন মহল যে কোনো দেশে করোনা সংক্রমণকে স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে দ্রুত ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকাদানের ওপর জোর দিয়ে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের টিকা কূটনীতিতে ব্যর্থতা, ক্রয়ে স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মের কারণে চাহিদা মোতাবেক টিকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. মোশাররফ বলেন, সরকারকে অনতিবিলম্বে টিকা ক্রয়ের সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কোটি কোটি টিকা ক্রয়ের জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাই প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রজেক্ট (বিশেষ করে মেগাপ্রজেক্ট) থেকে অর্থ প্রত্যাহার করে টিকা ক্রয়ে ব্যয় করতে হবে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, দীর্ঘদিন লকডাউন বা কঠোর লকডাউন করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলে দেশের অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন হবে এবং খেটে খাওয়া দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। অতএব, টিকা সংগ্রহ ও টিকাদান কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায়, দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য সরকারকেই সব দায় ও দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর