ব্যাংক আমানতের সুদের হার সর্বনিম্ন সাড়ে পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা জারি করে আমানতের সুদ হারের নতুন সীমা নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে। ২০১৯ সালে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশ জারি করা হয়। এতে আমানতের সুদের হার কোনো কোনো ব্যাংকে ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসে। মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের ওপরে থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির কম  হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং ব্যাংকিং খাতে দায়-সম্পদের ভারসাম্যহীনতা রোধে ৩ মাস ও তদূর্ধ্ব মেয়াদি আমানতের সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিতে হবে। ব্যক্তিপর্যায়ের মেয়াদি আমানত এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ তহবিল, অবসর-পরবর্তী পাওনাসহ বিবিধ পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে গঠিত তহবিল বাবদ রক্ষিত যে কোনো পরিমাণ মেয়াদি আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির হার থেকে কোনোভাবেই কম নির্ধারণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে আগের তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে আমানতের সুদহার কমছে। ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, অধিকাংশ ব্যাংকের মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র আমানতকারীসহ অন্যান্য আমানতকারীর একটি অংশ জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের সুদের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে বলে আমানতকারীদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া মেয়াদি আমানতের সুদহার বেশি কমে গেলে জনসাধারণ সঞ্চয়ে নিরুৎসাহিত হন। ফলে অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ খাতসহ বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ছে। ব্যাংক তহবিলের প্রধান উৎস হলো বিভিন্ন ধরনের আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানত। আমানতের সুদহার বেশি কমে গেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ব্যাংকের দায়-সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে।