সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির মহানায়ক

কাজী ফিরোজ রশীদ

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মুক্তির মহানায়ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন গণমানুষের নেতা। আজীবন নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছেন তিনি। বাংলার মানুষের অধিকারের জন্য তিনি সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনিই ছিলেন বাঙালির মুক্তির মহানায়ক। পাকিস্তানিদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন জাতির পিতা। পাকিস্তান আমলে সামরিক বাহিনীতে বাঙালিরা ৫ শতাংশ ভাগ পেত, তাও কেউ অফিসার হতে পারতেন না। শুধু এখানেই নয়, অন্য বিষয়গুলোতেও আমাদের সঙ্গে অনেক বৈষম্যমূলক আচরণ করা হতো। এ নিয়ে অনেকেই গা-ছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জাতির পিতা               বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাল ছেড়ে দেননি। পাকিস্তান সৃষ্টির পর প্রথম থেকেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তিনি। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া ছাত্রলীগকে কাজে লাগিয়েছেন। কারণ, বঙ্গবন্ধু যখন বুঝতে পারলেন, শুধু আওয়ামী লীগ দিয়ে কাজ হবে না, ছাত্রলীগকে কাজে লাগাতে হবে। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দিলেন গ্রামগঞ্জে গিয়ে এর পক্ষে জনমত গঠনের। জাতির পিতা ঠিকই জানতেন পাকিস্তানিরা ৬ দফা মানবে না। কিন্তু তারপরও আমরা কীভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছি, সেটা দেশবাসীকে জানাতে এবং শোষণ-শাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে কাজ করতে ছাত্রলীগকে দায়িত্ব দিলেন। আমরা ন্যায্য অধিকার চাই। আমাদের দেশে পাট চাষ হয়, সেটা নিয়ে যাওয়া হয় করাচিতে। আমরা বেতন দিতে পারি না, তারা আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে যায়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে একটি পোস্টার ছাপানো হয়েছিল, সেই পোস্টারটিতে ছিল পাকিস্তানের মানচিত্র। ‘পূর্ব পাকিস্তানে গাভী ঘাস খাচ্ছে আর পশ্চিম পাকিস্তানে দুধ দোহানো হচ্ছে’। অর্থাৎ আমাদের দেশে ঘাস খাচ্ছে আর ওরা দুধ খাচ্ছে। এই পোস্টারটা সারা দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। আমরা ছাত্রসমাজ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ঘরে ঘরে এবং হাটবাজারে গেছি। তখন প্রতিটি বাঙালির মুখেই ছিল এবার নির্বাচনে ‘শেখ সাহেব’কে ভোট দেব। এরপর ’৭০এর নির্বাচন হলো। বাঙালি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল। বাঙালি মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি সবসময় মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। বাঙালি জাতির মুক্তি নিয়ে কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু সবসময় মনে করতেন পরাধীন জাতি কখনো নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারে না। তারা শুধু বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে। সে জন্য কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষকে নিয়ে যেন একটা প্ল্যাটফরমে আসতে পারেন, সবাই যেন সমান অধিকার পায়। অর্থাৎ এককথায় বঙ্গবন্ধুর চাওয়া ছিল একটা ‘স্বাধীনতা’। সেই স্বাধীনতার ঘোষণা যখন দিলেন, আমরা তখন ঝাঁপিয়ে পড়লাম স্বাধীনতা যুুদ্ধে। ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ করে। মধ্যরাতে জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ওই রাতেই তাঁকে পাকিস্তানিরা গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। জাতির পিতার অবর্তমানে তাঁকেই রাষ্ট্রপতি রেখে আমরা ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করলাম।

অনুলিখন : রফিকুল ইসলাম রনি

সর্বশেষ খবর