মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ছয় প্রস্তাব

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ছয় প্রস্তাব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ রেখে যেতে সার্বিক বৈশ্বিক উদ্যোগের মাধ্যমে এ গ্রহের জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য বিশ্বনেতাদের প্রতি সাহসী ও জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্‌বান জানিয়েছেন।

তিনি নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল সকালে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায়) জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলাবিষয়ক নেতাদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ছয়টি সুপারিশ পেশ করেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করেন। শেখ হাসিনা তাঁর প্রস্তাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তির কঠোর প্রয়োগের আহ্‌বান জানান। তিনি উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়ের ওপরও জোর দেন।

জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বিকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিশেষ ফ্লাইটে নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

এরপর শেখ হাসিনা সরাসরি চলে যান জাতিসংঘ সংলগ্ন ম্যানহাটন লটে প্যালেস হোটেলে। সেখানেই তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবেন। শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন অটিজম আন্দোলনের বিশ্বনেতা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলও। জাতিসংঘে এটি হবে শেখ হাসিনার ১৮তম ভাষণ। দীর্ঘ ১৫ বছর পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করল। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রতি ফ্লাইটে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার করে লোকসানের অজুহাতে ২০০৬ সালের ২৯ জুলাই বন্ধ হয়ে যায় এই ফ্লাইট। প্রবাসীরা মনে করছেন, পুনরায় নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান চালুর পথ সুগম হলো। বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের শত শত নেতা-কর্মী জড়ো হয়েছিলেন। ফলে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানবন্দরের প্রায় পুরো এলাকা বাংলাদেশিদের দখলে ছিল। তারা  শেখ হাসিনাকে স্বাগত-শুভেচ্ছা স্লোগান দেন।

এই স্বাগত সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিবদমান গ্রুপগুলোর নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করলেও  কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াতের কিছু লোক বিক্ষোভের জন্য বিমানবন্দরে জড়ো হলেও নিরাপত্তারক্ষীরা অন্তত ২৫০ গজ দূরে তাদের জায়গা দেওয়ায় কোনোরকম বিশৃঙ্খলা হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি-জামায়াতের বিক্ষোভ থেকে ১০-১২ গুণ বেশি প্রবাসীর সমাগম ঘটেছিল শেখ হাসিনার স্বাগত-সমাবেশে। মিশিগান, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি, নিউজার্সি, কানেকটিকাট, বস্টন থেকেও বিপুলসংখ্যক প্রবাসী এসেছিলেন শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে।

স্বাগত-সমাবেশে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান, ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, জাকারিয়া চৌধুরী, আবদুল কাদের মিয়া, কাজী কয়েস, ইউসুফ ইকবাল প্রমুখ। অন্যদিকে, বিএনপির সমাবেশে ছিলেন গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান, মিল্টন ভূইয়া, শরাফত হোসেন বাবু, গোলাম ফারুক শাহীন প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর