শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
তিন্নি হত্যায় পেছাল রায়

কিছুই জানত না পরিবার, বাবা-চাচা সাক্ষ্য দেবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নির বাবা ও চাচার সাক্ষ্য দেওয়ার আবেদন জানানোয় আলোচিত হত্যা মামলার রায় ঘোষণা স্থগিত করেছে আদালত। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায়চৌধুরী গতকাল রায় ঘোষণা স্থগিত করে তিন্নির বাবা ও চাচার সাক্ষ্য নিতে ৫ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। মামলাটির একমাত্র আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুল করিম ও চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন বলে জানান আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ভোলানাথ দত্ত।

তিনি বলেন, তিন্নির বাবা ও চাচার আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল। তাঁরা তাঁদের সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন। আদালত সে আবেদন গ্রহণ করেছে। বিচারক কেশব রায়চৌধুরী তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম ও বাবা মাহবুব করিমের কাছে জানতে চান ‘আপনারা এত দিন কেন আসেননি, খোঁজ নেননি?’ তখন তিন্নির বাবা বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পরিবর্তন হওয়ায় আমরা এ মামলার তারিখ জানতাম না। তা ছাড়া করোনার কারণে আদালত বন্ধ ছিল। আমরা বয়স্ক মানুষ, আমাদের মেয়ের হত্যাকান্ডের সঠিক ও ন্যায়বিচার চাই। আগের পিপি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমরা পত্রিকায় খবর দেখে আদালতে এসেছি।’ এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভোলানাথ দত্ত আদালতকে বলেন, ‘আগের পিপি সাহেব বদলি হওয়ায় সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারায় এ ব্যত্যয় ঘটেছে। যেহেতু ওনারা বয়স্ক মানুষ, হত্যাকান্ডের শিকার মডেল তিন্নির বাবা ও আপন চাচা, তাই তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ না দিলে মামলাটিতে তার পরিবার ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।’ তিনি জানান, ফৌজদারি মামলার যে কোনো পর্যায়ে আদালত মনে করলে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারে। এটা আদালতের এখতিয়ার। এর আগেও কয়েক দফা পেছানো হয় আলোচিত এ হত্যা মামলার রায়। সবশেষ ২৬ অক্টোবর মামলাটির রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল, কিন্তু সেদিন রায়ের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর অজ্ঞাত পরিচয় এক লাশ পায় পুলিশ। পরদিন পত্রিকায় ছবি প্রকাশ হলে তা মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নির বলে শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। ২৪ নভেম্বর মামলাটির তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত করা হয়। আর তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির তৎকালীন পরিদর্শক ফজলুর রহমান। এরপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সবশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকই ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর সাবেক ছাত্রনেতা ও সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১০ সালের ১৪ জুলাই অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করে আদালত। চার্জশিটভুক্ত ৪১ সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

সর্বশেষ খবর