শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
জাতীয় পার্টি

কমিশন গড়তে আইনের প্রস্তাব

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করতে ইসিতে নিবন্ধিত ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই পর্যায়ক্রমে সংলাপে বসছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আগামী সোমবার শুরু হচ্ছে এ সংলাপ। প্রথম দিন বিকাল ৪টায় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ হবে। জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন সংলাপে তাঁরা ইলেকশন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নে গুরুত্ব দেবেন। তারা মনে করেন আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে স্থায়ী সমাধান হবে। জাতীয় পার্টি ইতিমধ্যে সংবিধানের আলোকে আইনের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানান, সংলাপের বিষয়ে বৃহস্পতিবার তারা চিঠি পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নেবে। পার্টির পক্ষ থেকে আটজন সংলাপে অংশ নিতে পারবেন। কী বিষয়ে কথা বলবেন জানতে চাইলে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও স্বাধীন করার জন্য আমরা আগেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আইনের দাবি করেছিলাম। আমাদের সে দাবি তো মানা হলো না। সে দাবি আমরা আবারও তুলব। এ ছাড়া আর কী বিষয় তুলে ধরা যায় সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আজ বনানী কার্যালয়ে পার্টির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের।’ জানা গেছে, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নেবেন পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করার ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি সংসদে সংবিধানে উল্লিখিত আইন প্রণয়নের বিষয়ে জোরালো বক্তব্য রেখেছে। ফলে এ দাবির ওপরই গুরুত্ব দেবে বেশি। নেতা-কর্মীদের অভিমত এ দাবি জাতীয় পার্টির দীর্ঘদিনের। তবে নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে জাপার পক্ষ থেকে কোনো নাম চাওয়া হলে সে ক্ষেত্রে তারা পরে নাম জানাবেন রাষ্ট্রপতির কাছে। এমনও হতে পারে, বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে ছেড়ে দিতে পারেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচনব্যবস্থা সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ করার জন্য একটি লিখিত প্রস্তাব দেবেন। সেখানে ইউপিসহ যতগুলো উপনির্বাচন হয়েছে তার একটি প্রতিবেদন দেওয়া হবে রাষ্ট্রপতিকে।

জাতীয় পার্টির দায়িত্বশীলরা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশে একটি আইন নেই যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সংবিধানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি আইন প্রণয়ন করার। তারা চান সংবিধানের আলোকে আইনের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠন হবে এবং তারা দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। এতে নির্বাচন কমিশন গঠনে স্থায়ী সমাধান হবে। তারা বলেন, প্রতি পাঁচ বছর পর রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেন। এতে নানাবিধ সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আবার দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কমিশনার নিয়োগ হলে মানুষের ভোটাধিকার লঙ্ঘিত হয়। তাই সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল ও এ বিষয়ে সিভিল সোসাইটির বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য একটি আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। আবার সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করার বাধ্যবাধকতা আছে। আইনের মাধ্যমে সৎ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে, যারা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর করে তুলবেন।

সর্বশেষ খবর