বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেছেন, পদ-পদবির জন্য তার কোনো টেনশন নেই। দল তার বিষয়ে যেটা সঠিক মনে করেছে সেটাই করেছে। দলের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়েছেন।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বিএনপির এই সাবেক সংসদ সদস্য (কিশোরগঞ্জ-২)। তিনি একসময় কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ২০ ফেব্রুয়ারি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামানকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বহিষ্কারের চিঠিতে সই করেন। মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বিএনপি থেকে বহিষ্কার হলেও তার দল নিয়ে স্বভাবসুলভ নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে ভোলেননি। তিনি বলেন, বিএনপিতে যখন যে যা বলে, তাই ফরমান হয়ে যায়। আমি এ পর্যন্ত তিন-চারবার বহিষ্কার হয়েছি, সেগুলো ১/১১-এর আগে। পরে বহিষ্কারাদেশ না থাকায় গত সংসদ নির্বাচনে (একাদশ) দলীয় প্রার্থীও হয়েছিলাম। সুতরাং আমি বহিষ্কার নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ করব না। বিএনপির এই সাবেক সাংসদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি দেশমাতা খালেদা জিয়ার কর্তৃত্ব ও নেতৃত্বের বাইরে কোনো বিএনপি হতে পারে না। বিএনপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার নিজের হাতে গড়া দল যা সংগঠিত ও বিকশিত হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ, অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টার কারণে। তাঁকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে বন্দি রেখে যারা বিএনপিকে ভাঙতে চায় তারা আর যাই হোক কোনো অবস্থাতেই বিএনপি ও দেশমাতার মঙ্গল চায় না।’ তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন বেগম খালেদা জিয়া এবং তাঁর অবর্তমানে বা অপারগতায় তারেক রহমান। এ ছাড়া সময়ের প্রয়োজনে জিয়ার উত্তরাধিকারীরা। এটি বিএনপির অগণিত কর্মীর আজীবন প্রত্যাশা ও কামনা। আমিও এর বাইরে নই।
আখতারুজ্জামান বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী দলে। তা সত্ত্বেও দলের নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, রেষারেষি এবং চেইন অব কমান্ড ডিঙানোর প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়নি। বর্তমান জটিল রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির গঠনতন্ত্রে একটি সংশোধনী এনে দলে একজন কার্যকরী চেয়ারম্যান তথা প্রধান নির্বাহীর পদ সৃষ্টি করা হোক। যিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে অনুপস্থিতির এই সময়ে দলের চেয়ারম্যানের সর্বময় দায়িত্ব পালন করবেন। মেজর (অব.) আখতার বলেন, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কার্যকরী চেয়ারম্যান পদে যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তিনি (খালেদা জিয়া) কোনো কারণ ছাড়াই যে কোনো সময় এই নিয়োগ বাতিলও করতে পারবেন। তারেক রহমান যখনই বাংলাদেশে আসবেন তখনই এই নিয়োগটি বাতিল হয়ে যাবে। তার মতে, এই নিয়োগ দলের নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও রেষারেষি এবং চেইন অব কমান্ড ডিঙ্গানোর সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দলের সবচেয়ে সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত।