মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ডেনমার্কের রাজকুমারীর ব্যস্ততা বাংলাদেশে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ডেনমার্কের রাজকুমারীর ব্যস্ততা বাংলাদেশে

তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস মেরি। মূলত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সুন্দরবনের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের অবস্থা পরিদর্শন করাই এ সফরের লক্ষ্য। গতকাল বিকালেই তিনি গিয়েছেন কক্সবাজার। আজ ঘুরে দেখবেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। আগামীকাল যাবেন সুন্দরবন পরিদর্শনে। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশাপাশি বন সংরক্ষকদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। ড্যানিশ রাজকুমারী গতকাল সকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন তাঁকে স্বাগত জানান। পরে তিনি গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। দুপুরে রাজধানীর হোটেল লে মেরিডিয়ানে তাঁর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে একটি কাঠামো চুক্তি সই হয়। ‘সাসটেইনেবল অ্যান্ড গ্রিন ফ্রেমওয়ার্ক এনগেজমেন্ট’ শীর্ষক এ কাঠামো চুক্তিতে সই করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এবং ডেনমার্কের উন্নয়ন ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ফ্লেমিং মুলার।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, এ ফ্রেমওয়ার্ক এনগেজমেন্ট বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে একটি সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে কাজ করবে। এরপর এটি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নিয়ে একটি অ্যাকশন প্ল্যানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বহুমুখী করার ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপ আমাদের দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ সংরক্ষণের ইঙ্গিত বহন করে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমঝোতা স্মারকটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের নিজস্ব অভিযোজন কৌশল, ড্যানিশ উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময়ে পরস্পরের মধ্যে একটি ঐক্য গড়ে তুলবে। ডেনমার্ক জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ডেনমার্কের প্রতিনিধি দল কক্সবাজার, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট উপকূলীয় অঞ্চল ঘুরে দেখবেন এবং ড্যানিশ সহযোগিতায় কী কাজ হয়েছে এবং আগামীতে কী সহায়তা দেওয়া যাবে তা পর্যালোচনা করবেন। ওই চুক্তির অধীনে অর্থায়ন, প্রযুক্তি সরবরাহ, বিশেষায়িত জ্ঞান দিয়ে সহায়তা করতে পারবে ডেনমার্ক বলে জানান মন্ত্রী। ডেনমার্কের উন্নয়ন ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ফ্লেমিং মুলার বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু এজেন্ডা বাস্তবায়নে ডেনমার্ক ও বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় এবং এ ব্যাপারে পরস্পরের মধ্যে সক্রিয় যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, আজকের এ গ্রিন ফ্রেমওয়ার্ক ডকুমেন্টে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হলো যে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর আন্তর্জাতিক চুক্তি ‘প্যারিস চুক্তিতে’ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে প্রস্তুত। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারকটি ২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর প্যারিস চুক্তি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন, পরিবেশগত ক্ষতি এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাসের বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করেছে।

এতে আরও বলা হয়, একটি টেকসই ও সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে প্রথম দেশ হিসেবে ডেনমার্ক বাংলাদেশের সঙ্গে একটি কাঠামোয় সংযুক্ত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর ড. মোমেনের সঙ্গে ডেনমার্কের মন্ত্রীর দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর