সীমিত সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়েও কৃচ্ছ্রসাধনের পথে হাঁটা শুরু করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্যাটাগরি নির্ধারণ, যানবাহন কেনা বন্ধ, সরঞ্জাম কেনায় বরাদ্দের অর্ধেক অর্থ ব্যবহার, উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন কমিটির সম্মানী ব্যয় বন্ধ রাখার পর এবার উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় সাশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থবিভাগ।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমান বৈশি^ক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহার ২০ শতাংশ কমাতে হবে। ফলে পেট্রোল, অয়েল, লুব্রিকেন্ট, গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থে সর্বোচ্চ ৮০ ভাগ ব্যয় করা যাবে। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দের ২৫ ভাগ সাশ্রয় করতে হবে। এসব খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো উপখাতে পুনরায় যোগ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সরকারের ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপসচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে। গাড়ির চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার মাসে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। গাড়ি কেনার জন্য যত টাকা ব্যয় হয় তার অর্ধেকও বহন করে সরকার। এ ছাড়া জেলা পর্যায়ে সরকারি গাড়ি ও চালক থাকায় জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা মাসে ২৫৮ লিটার পেট্রোল বা অকটেন অথবা ৩৫৮ ঘনমিটার গ্যাস বরাদ্দ রয়েছে। সিএনজি চালিত যানবাহন স্টার্ট করার জন্য আলাদা তেল বরাদ্দ রয়েছে।
গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে জ্বালানি সাশ্রয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়। সেখান থেকে আটটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন অফিসে জ্বালানি বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
এর আগে সরকার চলতি অর্থবছরের শুরুতেই প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে প্রকল্পের ক্যাটাগরি নির্ধারণ, যানবাহন কেনা বন্ধ, সরঞ্জাম কেনায় বরাদ্দের অর্ধেক অর্থ ব্যবহার, উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন কমিটির সম্মানী ব্যয় বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার ৩২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ করা ভর্তুকিতে ব্যয় করার উদ্যোগ নিয়েছে।