বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

ভোটে না এলে সংবিধান বন্ধ থাকবে না

♦ অর্থ পাচারে স্বনামধন্য অনেকেই ♦ জোট থাকবে কি না সময় বলবে ♦ আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করে দরজা খোলা ♦ জিতে আসতে পারবে কি না সেটা দেখেই প্রার্থী ঠিক করা হয় ♦ ভারত থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসিনি সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি তেল আসবে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করলে আগাম বার্তা ♦ রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইতিবাচক ভারত তবে সমস্যা মিয়ানমার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভোটে না এলে সংবিধান বন্ধ থাকবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সময়মতো আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে আসুক। এখন কোনো দল না এলে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। এজন্য সংবিধান বন্ধ থাকবে না।

গতকাল বিকালে গণভবনে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। এমনই এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে কে থাকবে সেটা সময় বলে দেবে। জাতীয় পার্টি আমাদের সঙ্গে ছিল, তারা নির্বাচন করেছে। আগামী নির্বাচনে কে কোথায় থাকবে সেটা সময়ই বলে দেবে। আওয়ামী লীগ উদারভাবে কাজ করে। আমাদের দরজা খোলা। জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেক দিক বিবেচনা করেই প্রার্থিতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন স্বাভাবিক। যাঁরা একটু বয়স্ক তাঁদের হয়তো বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

সম্পর্ক সুসংহত করে আরও এগিয়ে যেতে চাই : বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের মধ্যকার প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। আমি মনে করি কভিড মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ তিন বছর বিরতির পর আমার এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। তিনি বলেন, সফরের পুরো সময় জুড়ে আমরা ভারতের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ও সৎ প্রতিবেশী হিসেবে সমতা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দুই দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার লক্ষ্য করেছি। ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে, সংবাদমাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। এ প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই। সফরের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের মানুষ উপকৃত হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, সব মিলিয়ে পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের একসঙ্গে নতুনভাবে এগিয়ে চলার গতি সঞ্চার হয়েছে। আমার দৃঢ়বিশ্বাস, উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া অচিরেই একটি সমৃদ্ধিশালী অঞ্চলে পরিণত হবে।

বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের সব দল এক : শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের সব দল-মত এক থাকে, এটা হলো বড় কথা। আমরা যখন আমাদের স্থলসীমানা চুক্তি বাস্তবায়ন করি, ছিটমহল বিনিময় করি তখন ভারতের পার্লামেন্টে আইনটা পাস হয়। তখন কিন্তু সব দল এক হয়ে আইনটা পাস করেছিল। পাশাপাশি একটি দেশের সঙ্গে নানা সমস্যা থাকতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় মনে করি, সব ধরনের সমস্যা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যায়।

আরও অর্থ পাচারকারীর নাম আসবে : অর্থ পাচার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অর্থ পাচারকারী এমন অনেকের তথ্য আছে সেটা আপনারা লিখবেন কি না সন্দেহ। আমি সোজা কথা বলি, অনেক স্বনামধন্যের তথ্য আমার কাছে আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আর বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সামনে তাদের নাম আসবে, তবে আপনারা ছাপাবেন কি না আমি সেটা দেখব। তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথা হচ্ছে অর্থ পাচারকারীর তথ্য নেওয়া হচ্ছে। সুইস ব্যাংকে কিন্তু আমরা বহু আগে ডিমান্ড পাঠিয়েছিলাম। আমরা তালিকা চেয়েছিলাম। কিন্তু তালিকা আসেই নাই। সবাই হাওয়ায় কথা বলে যায়। কিন্তু কেউ সঠিক তথ্য দিয়ে বলে না। মানি লন্ডারিং বন্ধে যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ডলার সংকট বাংলাদেশের একার না, বিশ্বব্যাপী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা স্যাংশন দিল, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গেল। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ যেখান থেকে ঋণ নেয় সব সময় ঠিক সময়ে শোধ করে। আমরা কোনো দিন খেলাপি হইনি। সেটা করতে গিয়েও রিজার্ভে একটু টান পড়ে। আমার তো শঙ্কা সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, চরম অর্থনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত ইতিবাচক, সমস্যা মিয়ানমার : রোহিঙ্গা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করছে। নিজেদের মধ্যে অস্ত্রবাজি ও সংঘাত করছে। পরিবেশকে তারা আরও নষ্ট করছে। ভারতকে আমরা বলেছি তারা যেন মিয়ানমার ইস্যুতে সহযোগিতা করে। তাদের ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমার নিয়ে। এরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে লিপ্ত থাকে। ভারত মনে করে এটার সমাধান হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের স্থান দিয়েছি, কিন্তু এখন যে পর্যায়ে যাচ্ছে তারা আমাদের জন্য একটা বোঝা হয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার সরকারের ওপরও বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের যে যতই চাপ দিক, এরা কোনো ইয়ে করে না। তারা নিজেরাই তো নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। এখানেই বড় সমস্যা।

একেবারে শূন্য হাতে এসেছি বলা যাবে না : ভারত সফরের প্রাপ্তি কী- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নটা আপেক্ষিক। ভাগ্যিস প্রশ্ন করেননি যে কী দিলাম? একেবারে শূন্য হাতে এসেছি তা নয়। এটা আসলে মনের ব্যাপার। যেমন বাংলাদেশে এত কাজ করার পরও বিএনপি বলে কিছুই করিনি। তিনি বলেন, কী পেলাম তা নিজের ওপর নির্ভর করছে, কীভাবে দেখছেন। কেউ যদি প্রশ্ন করে কী দিলাম। আমি যা যা পেয়েছি সেটা বললাম। ভৌগোলিক অবস্থানটাও আমাদের দেখতে হবে। আমাদের চার দিকে ভারত। সেই বন্ধুপ্রতিম দেশ থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য, কৃষি, যোগাযোগ সব বিষয়ে সহযোগিতা আমরা পাই। এমনকি পাইপলাইনে করে তেল নিয়ে এসেছি। ভারত কিন্তু এটা করে দিয়েছে। একেবারে শূন্য হাতে এসেছি বলা যাবে না। এটা আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।

বিএনপি দেশের স্বার্থের কথা ভুলে যায় আওয়ামী লীগ ভোলে না : বিএনপির শাসনামলে ভারত সফরে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নানা সিদ্ধান্ত এবং গঙ্গার পানি নিয়ে কথা বলতে ভুলে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা ভুললেও আওয়ামী লীগ ভোলে না। কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়ে যারা সমালোচনা করেছে যে কতটুকু পানি এলো! আমরা যে সমঝোতা স্মারকটা সই করলাম, এর ফলে পুরো সিলেট বিভাগ বিশেষ করে সিলেটের গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট, সিলেট সদর, জকিগঞ্জ উপজেলার ৫৩ হাজার ৪২০ হেক্টর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে এবং মোট ১৬ হাজার ৬০০ হেক্টর রহিমপুর পাম্প হাউসের মাধ্যমে সেচ প্রদান করা সম্ভব হবে। এই এত জমি চাষের আওতায় এসে ফসল দেবে, এ ফসল কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের কাজে লাগবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া যখন ভারত সফরে গেল... সেখানে তারা আদর আপ্যায়নও কম করেনি... কিন্তু ফিরে এসে কী বলল? গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম। এই তো উত্তর ছিল অর্থাৎ গঙ্গার পানিতে বাংলাদেশের যে অধিকার আছে, সেই অধিকারের কথাটা বলতেই ভুলে গিয়েছিলেন। যারা সেখানে গিয়ে নিজের দেশের স্বার্থের কথাটা ভুলে যায়, তারা সমালোচনা করে কোন মুখে?

ভারত থেকে ডিজেল আসবে পাইপলাইনের মাধ্যমে : ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আনা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আসবে। এতে তেল পরিবহনের খরচ অনেকটা কমে যাবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট নিরসনে পাশে দাঁড়াবে ভারত। এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে এলএনজি আমদানির বিষয়েও কথা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পাইপলাইন নির্মাণের ফলে জ্বালানি তেলের পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং সহজে, দ্রুততম সময়ে ও প্রতিকূল পরিবেশেও দেশের উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা যাবে। বর্তমানে ভারত থেকে বার্ষিক ৬০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়। পাইপলাইনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা সম্ভব হবে। পার্বতীপুরে বর্তমানে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ১৫ হাজার মেট্রিক টন। চলমান প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্যাপসিটি বৃদ্ধি পাবে। জ্বালানি তেলের আমদানি উৎস বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ২৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে জ্বালানি তেল সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তুলনামূলক স্বল্প সময়ে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ডিজেল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল, এভিয়েশন ফুয়েল আমদানি করা সম্ভব হবে। ফলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এলএনজি আমদানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষত খুলনার বিদ্যুৎ ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল চাহিদার কথা বিবেচনা করে ক্রস-বর্ডার পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানির বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন আছে। সফরের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যার মাধ্যমে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে কাজ করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য আন্তসীমান্ত রেলসংযোগে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে। তিনি বলেন, চিনি, পিঁয়াজ, আদা, রসুনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য রপ্তানি বন্ধের আগে বাংলাদেশকে আগাম বার্তা দিতে ভারত সরকার পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশের মুজিবনগর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সড়ক চালু করা হবে। নদীদূষণ এবং অভিন্ন নদন্ডনদীর ক্ষেত্রে নদীর পরিবেশ এবং নাব্য উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রেলওয়ে সেবার মান বাড়াতে আইটি সলিউশন বিনিময় করা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি নিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য কর্মকর্তাদের কাজ শুরু করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের এখন সাশ্রয় ও সঞ্চয় করতে হবে। আমাদের নিজেদের যে মাটি আছে, যার যেটুকু আছে নিজেদের খাবারের ব্যবস্থা নিজেরা করে রাখুন। না হলে সামনে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব : দ্য মেকিং অব আ নেশন’ ছবিটির ফাইনাল কপি দেখেছেন কি না এবং ছবিটি কবে মুক্তি পাবে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ট্রেলর প্রকাশের পর ২৬ মার্চের ভাষণ নিয়ে কিছু কথা উঠেছে। এ ক্ষেত্রে আমার যেটা মনে হয়েছে, ২৬ মার্চের ভাষণে জাতির পিতাকে আমরা যেভাবে দেখি বা দেখেছি সেটা পর্দায় এভাবে দেখার পর নিতে একটু কষ্ট হচ্ছে। তবে এটাও ভেবে দেখুন, ট্রেলর যদি ভালো না হতো মানসম্পন্ন না হতো, তাহলে কান চলচ্চিত্র উৎসব এটা গ্রহণ করত না।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক যতটুকু দেখেছেন তা ভালো লেগেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছবির শুটিং শুরুর পর করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। অবশেষে ভারত ও বাংলাদেশে শুটিং শেষ করা হয়। এখন এডিটিং চলছে। আমরা একটা ভালো সময় ছবিটি দেখানোর চেষ্টা করছি।

‘মুজিব : দ্য মেকিং অব আ নেশন’ একটি সিনেমা এবং এটাকে সিনেমা হিসেবে দেখারই আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অভিনয় করাটা কিন্তু অনেক কষ্টের। একটা চরিত্র করতে গেলে সেই চরিত্র গ্রহণ করা, সেই সেন্টিমেন্ট তৈরি করা অনেক কষ্টের। এখানে আমাদের দেশের যারা অভিনয় করেছেন তারা অনেক ভালো করেছেন।

সব কথা বলার পরও বলে কথা বলার অধিকার নাই : আওয়ামী লীগ সরকার কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সব কথা বলার পরও বলে কথা বলার অধিকার নাই, এটাও শুনতে হয়! তিনি বলেন, এখন টকশো করে যে-যার মতো কথা বলে। আওয়ামী লীগ সরকার আসার আগে কে এত কথা বলার সুযোগ পেয়েছে? পায়নি। তিনি বলেন, রাস্তায় আন্দোলনে জনগণ সাড়া না দিলে সেটা তো আমাদের দায়িত্ব না। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতান্ডকর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর তো সবাই চড়াও হয়েছে। জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করলে তার পর থেকে একের পর এক। লাশ টানতে টানতে আর চিকিৎসা করতে করতে নাভিশ্বাস উঠেছিল আমাদের। আজকে কি সেই পরিবেশ আছে, তা তো নাই। তিনি বলেন, এমনকি আমাদের পার্টির কেউ যদি কোনো অন্যায় করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দিই না। আমার দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, কিছু বলব না তা কিন্তু না। যে অন্যায় করবে তার বিরুদ্ধে আমি কিন্তু ব্যবস্থা নেব এবং নিচ্ছি। সেটা আমি কখনো সহ্য করব না।

জাতিসংঘ ভাষণে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী

বছরে ৩৫০ কোটি টাকা সাশ্রয়ের লক্ষ্য চিকিৎসায় নবদিগন্ত

 

সর্বশেষ খবর