রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

হেফাজতে আসামিকে নির্যাতনে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয় : আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে আসামির ওপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে তিন কার্যদিবসের মধ্যে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার রাতে এ আদেশ দেন রংপুর কোতোয়ালি আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু হেনা সিদ্দিকী। এ ছাড়া সিভিল সার্জন ও জেল   সুপারকে ওই আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রংপুর কোতোয়ালি সদর আমলি আদালতের আদেশের অনুলিপি সূত্রে জানা গেছে, সদর কোতোয়ালি থানা এলাকার উত্তর মমিনপুর যুগীপাড়া গ্রামের যতীন চন্দ্র দেবনাথের ছেলে শ্রী শ্যামল চন্দ্র দেবনাথ একজন পল্লী প্রাণী চিকিৎসক। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর প্রাণী চিকিৎসা শেষে রাত ৮টার দিকে বাড়ি যাওয়ার সময় পথে কোতোয়ালি থানার এসআই আসাদসহ চারজন পুলিশ শ্যামলের মোটরসাইকেল ঘিরে ফেলে। এরপর ওসি জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে শ্যামলকে থানায় নিয়ে যান তারা। পরে শ্যামলকে রামদাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এতে শ্যামল রাজি না হলে রাত ১২টার দিকে ওসির রুমে শ্যামলকে হাজির করা হয়।

রামদাস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজসাক্ষী না হলে ওই মামলায় শ্যামলের স্ত্রী-সন্তানদের ঢুকিয়ে দেওয়া হবে বলে ভয়ভীতি দেখায় ওসি মোস্তাফিজার রহমান। এরপর সার্কেল এএসপি হোসাইন মোহাম্মদ রায়হানসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা রাত সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শ্যামলকে মারপিট করেন। পরে তাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গ্যাসের ওষুধ ও ব্যথার ওষুধ খাওয়ানো হয়।

পরদিন সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্যামলকে নানা ভয়ভীতি দেখায় পুলিশ। আদালতে যদি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয় তাহলে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে শ্যামলের ওপর নির্যাতনের ভয় দেখানো হয়। আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আসামির লিখিত অভিযোগ ও মৌখিক বক্তব্যের ভিত্তিতে আসামির শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করান। এতে তিনি কোমড়ের পেছনের দিক থেকে হাঁটু পর্যন্ত কালোশিরার দাগ, ফোলা, জখম ও লাল রক্ত জমাট অবস্থান দেখতে পান। এ বিষয়ে এএসপি রায়হান বলেন, গত ১৮ আগস্ট রামদাস নামে এক ব্যক্তি খুন হন। ২০ আগস্ট রামদাসের লাশ উদ্ধার ও মামলা করা হয়। ওই ঘটনায় মুকুল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। মুকুল ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে শ্যামলের নাম উল্লেখ করে। পরে শ্যামলকে গ্রেফতার করা হয়। নির্যাতনের বিষয়টি সঠিক নয়।

সর্বশেষ খবর