মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন

টাকা ও ডলারের কোনো সংকট নেই ব্যাংকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা অত্যন্ত সুদৃঢ় আছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় টাকার কোনো অভাব নেই। সবার আমানত সুরক্ষিত আছে। ডলারের সংকট হয়নি। ব্যাংকগুলো প্রতিদিনই বাণিজ্যিক ঋণপত্র বা এলসি খুলছে। এলসি খোলা বন্ধের কোনো নির্দেশনা দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। সক্ষমতা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো পণ্যের বিপরীতে এলসি খুলছে। বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত ডলার সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি ভবিষ্যতেও দিয়ে যাবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জিএম আবুল কালাম আজাদ এসব কথা বলেন। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার পরিস্থিতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর মতিঝিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাংকের আমানত তুলে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক খবর প্রচারিত হয়েছে। এ ব্যাপারে সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বর্তমানে ১,৬৯,৫৮৬ কোটি টাকা তারল্য রয়েছে। কমার্শিয়াল এলসি ওপেন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। স্ব স্ব ব্যাংক তাদের রেমিট্যান্স আয় ও রেমিট্যান্স ব্যয়সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল বিবেচনায় ঋণপত্র খুলছে, খুলে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিপূর্ণ গাইডলাইন মোতাবেক তদারক করে যাচ্ছে। বিশেষ তদারকিতে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, চলতি নভেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত এলসি খোলা হয়েছে ১ হাজার ২৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অক্টোবরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ২৩২ মিলিয়ন ডলার। অক্টোবর মাসে মোট এলসি খোলা হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৩ মিলিয়ন ডলার। প্রধানত করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতির বহিঃখাতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, বিদেশি মুদ্রায় কোনো লোন ডিফল্ট হয়নি। অগ্রাধিকার খাত এবং জরুরি পণ্য (জ্বালানি, সার ও খাদ্য) আমদানিতে সরকারি ঋণপত্রের মূল্য পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রেখে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকারি ঋণপত্রে ডলার সাপোর্ট দিয়ে চলেছে এবং সাপোর্ট দিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, চলতি নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৬৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, গত বছর একই সময়ে এসেছিল ৬৪১ মিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এখানে প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর জুলাই থেকে সর্বশেষ ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে অনেকটাই ভারসাম্য ফিরে আসবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরও বলেন, তারল্য ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধানত রেপো ও অ্যাশিউরড লিকিউডিটি সাপোর্ট নীতি রয়েছে। ব্যাংকসমূহে জনগণের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ রয়েছে। ব্যাংকে জনগণের আমানত নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই ঘটেনি।

 

সর্বশেষ খবর