শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের তান্ডব চলছে : মোশাররফ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা টাউন হল মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ নারকীয় তান্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল কুমিল্লার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। আজ এ সমাবেশ হবে।

ড. মোশাররফ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার  কনস্টেবল বিশ্বজিৎ শটগান ঠেকিয়ে নির্মমভাবে ছাত্রদল নেতা নয়নকে হত্যা করেন। অথচ মামলা দেয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে। এ মামলায় রফিক ও সাইদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন ও কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া। ড. মোশাররফ বলেন, গণসমাবেশ কেন্দ্র করে ১০-১২ দিন ধরে নারকীয় তান্ডব চালাচ্ছে সরকারি দলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি গিয়ে ভীতি প্রদর্শন করছে। ২১ নভেম্বর মধ্যরাতে লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদের বাড়ি সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ করায় চাঁদপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিম উল্লাহ সেলিমের বাড়িসহ বিভিন্ন নেতা-কর্মীর বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি ও ভীতি প্রদর্শন করেছে। ২৩ নভেম্বর হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলায় ঘরে ঘরে তল্লাশি ও গণগ্রেফতার করা হয়েছে। ১৯ নভেম্বর কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের খিলা ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামে গণসমাবেশ উপলক্ষে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়ে স্থানীয় ছাত্রদল নেতা লিটনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ছাত্রদল ও যুবদলের তিন নেতা-কর্মী আহত হন। তার আগের দিন সন্ধ্যার পর লাকসাম পৌরসভার চাঁদপুর রেলগেট এলাকা থেকে লাকসাম পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা আমান উল্লাহকে তুলে লাকসাম রেল ক্লাবে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তার মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। লাকসাম-মনোহরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন ঘটনা এখন প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্থানীয় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, আমজাদ ও রুবেল মাস্টারের নেতৃত্বে ৭০-৭৫ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামে বিএনপি নেতা ডা. নাসিরের বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে না পেয়ে পরিবারের নারী সদস্যদের মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঞ্ছিত করেছে। গর্ভবতী মহিলাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাননি। বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বিএনপির কুমিল্লার গণসমাবেশ কেন্দ্র করে সরকারি দল ও পুলিশ নারকীয় তান্ডব চালাচ্ছে। তবে তারা যতই নির্যাতন-নিপীড়ন করুক কুমিল্লা বিভাগবাসীকে আগামীকাল কোনো অপশক্তি দমিয়ে রাখতে পারবে না। ড. মোশাররফ আরও বলেন, এ সরকার ভোট চোর। প্রধানমন্ত্রী যশোরের সমাবেশে বলেছেন, আপনারা ভোট দিয়ে পলাতক নেতাকে ক্ষমতায় আনতে চান? এর মানে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। এ কথা প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন সমাবেশ উপলক্ষ করে গোটা কুমিল্লা নগরী উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এত বাধাবিপত্তির পরও আগের সাতটি সমাবেশ ব্যাপক শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কথা দিলাম, কুমিল্লার সমাবেশও শান্তিপূর্ণ হবে। ড. মোশাররফ বলেন, সরকারের বিভিন্ন লোকজন বলছেন খেলা হবে। এটা খেলা নয়, রাজনীতি। এ রাজনীতির মাধ্যমেই আমরা দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি মেরামত করতে চাই।

সর্বশেষ খবর