সরকারের বর্তমান মেয়াদের চার বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন-সংক্রান্ত যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার সংগ্রহ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সরকারপ্রধান হিসেবে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এসব অঙ্গীকার এবং উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের ভূমিকাও চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে থাকা অধিদফতর, সংস্থা ও পরিদফতরে গত পাঁচ বছরে খালি হওয়া শূন্য পদে কী পরিমাণে নিয়োগ হয়েছে এরও পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সরকারি দফতরের শূন্য পদ কীভাবে দ্রুত পূরণ করা যায় সে বিষয়েও সচিবদের পরামর্শ ও মতামত নিয়েছে তারা। এ ছাড়া ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মন্ত্রণালয়গুলো কীভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়েও সংশ্লিষ্ট সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন-সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতির সফল বাস্তবায়ন ও প্রশাসনের শূন্য পদ দ্রুত পূরণে এখন থেকে প্রতি মাসে একবার সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে ‘সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা’দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উল্লিখিত বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। এতে অধিকাংশ সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনেকে গতকালের বৈঠককে ‘সচিবসভা’ বললেও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যতালিকায় ‘সচিব ও সচিব সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা’দের সঙ্গে বৈঠক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত সচিবসভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। কিন্তু গতকালের বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। তবে একাধিক সচিব এমন মন্তব্য করেছেন, ‘গত চার বছরে মন্ত্রণালয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কতটুকু কাজ করেছে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। সচিবদের আমলনামা বিশ্লেষণের কাজ চলছে।’ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রায় অভিন্ন ভাষায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এটা কোনো সচিবসভা ছিল না। মূলত প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠক ছিল। ওই কমিটির বৈঠকে সাধারণত ১২ থেকে ১৫ জন সচিব উপস্থিত থাকেন। যেহেতু নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব যোগদানের পর অনেকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা হয়নি, তাই বাকি সচিবদেরও সেখানে ডেকেছিলেন তিনি। বেশির ভাগ সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সরকারের বর্তমান মেয়াদের চার বছরে প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন অগ্রগতির হারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অঙ্গীকার ও উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়নের হার একেবারেই কম তাদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে থাকা অধিদফতর, সংস্থা ও পরিদফতরে গত পাঁচ বছরে খালি হওয়া শূন্য পদে কতসংখ্যক নিয়োগ হয়েছে, এখনো কতসংখ্যক পদ খালি রয়েছে, কেন খালি রয়েছে- সেসব বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মন্ত্রণালয়গুলো কীভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়েও সচিবদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সচিবসভার নির্দেশনাগুলো অনুসরণ ও বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয় বৈঠকে। প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পর সচিব কমিটির সদস্যদের রেখে অন্য সচিবদের ছুটি দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এরপর সচিব কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সচিব জানান, বৈঠকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগতির হার জানতে চাওয়া হয়েছে। যাদের অগ্রগতি বাস্তবায়নের হার কম, এরও কারণ জানতে চাওয়া হয়। বলা হয়, সরকারপ্রধান হিসেবে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অঙ্গীকার ও উন্নয়নদর্শন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের। বর্তমান সরকারের মেয়াদ মাত্র এক বছর আছে। এ সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সব ধরনের উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শূন্য পদে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, সরকারের মোট শূন্য পদের সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩৭। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল চাকরির সুবিধা পরিবারে পরিবারে পৌঁছে দেওয়া। অথচ গত অর্থবছরে মাত্র ৫১ হাজার ৯০৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে। মহামারির কারণে এর আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৫৫৩। এসব শূন্য পদ পূরণের বাধা দ্রুত দূর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সচিবদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। অপর এক সচিব বলেন, ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মন্ত্রণালয়গুলো কীভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৪১ সালে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। আর সেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা চলে যাব। সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চারটি ভিত্তি সফলভাবে বাস্তবায়নে কাজ করছে। এগুলো হচ্ছে- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। তরুণদের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার।
শিরোনাম
- পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট, মাদাগাস্কারে মানুষের উল্লাস
- ‘কিছু দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল’
- অসামাজিক কাজে রাজি না হওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
- এবার ভরিতে ৪৬১৮ টাকা বেড়েছে স্বর্ণের দাম
- ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা অস্পষ্ট: রাশিয়া
- বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রধান শিক্ষকের সংসার, মাঠ যেন গো-চারণভূমি
- পেকুয়ায় নৌবাহিনীর তিন দিনব্যাপী বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন শুরু
- পঞ্চগড়ে ‘ঘরে ঘরে জনে জনে’ কর্মসূচি নিয়ে নওশাদ জমির
- ন্যায্য পানি বণ্টন ও আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশের আহ্বান
- ২০২৫ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় তিন লাখ দক্ষিণ সুদানী: জাতিসংঘ
- ‘জামায়াত মায়া কান্না করে নির্বাচনী বৈতরনী পার হতে চায়’
- বাঞ্ছারামপুরে অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার
- দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ আসছেন অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী ড. অ্যালি
- মুক্ত ১৫৪ ফিলিস্তিনিকে মিসরে পাঠাল ইসরায়েল
- পাকিস্তানে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা, নিহত ৫
- নেতানিয়াহুকে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তির আহ্বান ট্রাম্পের
- বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে চিরিরবন্দরে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম
- জাবিতে র্যাগিংয়ের অভিযোগে ১৬ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
- চিংড়িতে জেলি পুশ করায় ব্যবসায়ীকে লাখ টাকা জরিমানা
- চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ১৮ নভেম্বর
জমা হচ্ছে সচিবদের আমলনামা
সরকারের অঙ্গীকার ও উন্নয়ন দর্শন বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সচিবদের ভূমিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ, নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে প্রথম বৈঠক
উবায়দুল্লাহ বাদল
প্রিন্ট ভার্সন

সচিবদের কাছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অগ্রগতির হার জানতে চাওয়া হয়েছে
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির আহ্বান, ট্রাম্পের ভাষণ চলাকালে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে হট্টগোল
৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

হামাসের ‘নতুন করে অস্ত্রসজ্জিত’ হওয়ার বিষয়ে মার্কিন অনুমোদন রয়েছে: ট্রাম্প
৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম