বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রবিবার পর্যন্ত কারামুক্ত হতে পারছেন না ফখরুল-আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আগামী রবিবার পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে। ওই দিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে জামিন বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত হাই কোর্টের দেওয়া জামিননামা (বেইল বন্ড) দাখিল না করার নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত।

গতকাল আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনিরুজ্জামান মনির, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। আদালতে বিএনপির দুই নেতার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সগীর হোসেন লিয়ন। এ সময় আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট এ জে ভূঁইয়া, গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজলসহ বিএনপিপন্থি শতাধিক আইনজীবী। আদেশের পর আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে হাই কোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর ৮ জানুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে ওই দিন পর্যন্ত হাই কোর্টে জামিননামা দাখিল করতে পারবেন না মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবীরা। ফলে রবিবার পর্যন্ত তাঁরা কারামুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ফখরুল ও আব্বাসের জামিননামা সংশ্লিষ্টদের কাছে দাখিল করতে পারবেন না মর্মেও আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুলও জারি করেন আদালত। এরপর তাদের জামিন স্থগিত চেয়ে গতকাল সকালে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার জজ আদালত গতকাল এ আদেশ দেন। এর আগে বিচারিক আদালতে চার দফায় ফখরুল-আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর হয়। ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নিজ নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ১২ ও ১৫ ডিসেম্বর আরও দুই দফায় তাদের জামিন আবেদন খারিজ করেন বিচারিক আদালত। ৭ ডিসেম্বর বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায় বলে দাবি করে পুলিশ। এ ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। পল্টন থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে এ মামলার এজাহারে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।

সর্বশেষ খবর