বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যাত্রাবিরতি

বাণিজ্য ঘাটতির বিষয় চীনকে স্মরণ করিয়ে দিল বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ঢাকায় এক ঘণ্টার যাত্রারিরতি দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে রাত ২টায় তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাত ৩টায় তাকে বহনকারী বিমান বিমানবন্দর ত্যাগ করে। চীনের বেইজিং থেকে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া যাওয়ার সময় জ্বালানি সংগ্রহের জন্যই এ যাত্রাবিরতি দেয় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ বিমান।

বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংকে স্বাগত ও বিদায় জানান। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য-ঘাটতির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে দ্রুত সমতা আনতে চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাংকে তাগিদ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। চীনের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

সাংবাদিকদের ড. মোমেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ১৪০০ কোটি ডলার কিন্তু এর মধ্যে চীনের রপ্তানি ১৩০০ কোটি ডলার। এটা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে, এতে আমাদের সুবিধা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ঢাকা সফর করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। চীনা প্রেসিডেন্টের ওই সফরে বেইজিং ঢাকার সঙ্গে কয়েকটি চুক্তি করলেও সেগুলোর অনেকগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। চীনের প্রেসিডেন্ট শি যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন অনেক চুক্তি করেছিলাম। অনেক টাকার অ্যাগ্রিমেন্ট কিন্তু সবগুলো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী। উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ যেভাবে চলছে ও এর উন্নয়ন অভাবনীয় এবং চীন এর সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায়। চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জোগান ব্যাহত হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে এবং নতুন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের বড় ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং এ বিষয়ে চীনারা আমাদের সহায়তা করেছে। সেই সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন মিয়ানমারে কিছু অসুবিধা আছে। সে জন্য এটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্পে চীন যে কাজ করছে সেটি যেন আরও ত্বরান্বিত হয়, সেটিও আমরা বলেছি। ড. মোমেন বলেন, আমরা এক চায়নায় বিশ্বাস করি। এটা আমাদের মূলনীতি। এটা আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। আমাদের সবাইকে নিয়েই চলতে হয়। সুতরাং আমরা চীনের টাইম টু টাইম সাপোর্ট নেব। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বেইজিং সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি বলেছি, আপনি অল্প সময়ের জন্য নয়, রেগুলার আসেন। তখন আমরা আমাদের একাধিক বিষয়ে আলাপ করতে পারব। একই সঙ্গে করোনার টিকা দেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর