সোমবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিরাপদ সড়কে বাংলাদেশ ভারতের পরেই : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, নীলফামারী ও সৈয়দপুর প্রতিনিধি

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ বিষয়টি সত্য নয়। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে নিরাপদ সড়কের দিক থেকে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পেশাদার মোটরযান চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে গতকাল টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারদলীয় সদস্য এম আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ বিষয়টি সত্য নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সবশেষ ২০১০ সালে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড হেলথ র‌্যাংকিং অনুসারে ১৮৩টি দেশের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৮তম (মৃত্যু হার ১ লাখে ১৬.৭৪ জন)। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও ভারতের অবস্থান যথাক্রমে ৭২, ৮২, ৮৫ ও ৯০তম। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে নিরাপদ সড়কের দিক হতে ভারতের পরেই আমাদের অবস্থান। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ সম্পর্কে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নকল্পে গত বছর ৩০ জানুয়ারি থেকে পেশাদার মোটরযান চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরে কয়েকটি হাসপাতাল এবং অন্যান্য জেলা হাসপাতালে গাড়ি চালকদের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারী যানবাহনের ড্রাইভারদের লাইসেন্স নবায়নের সময় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএর নির্দেশনা অনুযায়ী বিআরটিসিতে কর্মরত সব চালকের পর্যায়ক্রমে ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন সড়কে ছয়টি বাঁক সোজা করা হয়েছে। মহাসড়কসমূহে ডিভাইডার বসানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে সার্ভিস পেন নির্মাণ করা হচ্ছে। আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক সমিতির মতামত গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। গাড়ি চালকদের বিশ্রামের জন্য চারটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি বিশ্রামাগার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ কচুপাতার ভোরের শিশিরবিন্দু নয়, যে টোকা দিলেই পড়ে যাবে। আওয়ামী লীগের মজবুত ভিত্তি আছে, যা বিএনপির নেই। আওয়ামী লীগের ভিত্তি বাংলাদেশের মাটিতে, মানুষের মনের মধ্যে। আর দেশের মানুষ ও অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে ফের শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সৈয়দপুর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্থানীয় অফিসার্স কলোনি ফাইভ স্টার মাঠে আওয়ামী লীগের শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে রংপুর বিভাগের আট জেলা ও রংপুর মহানগর মিলে ২৭ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়। ওবায়দুল কাদের প্রতি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে ৩ হাজার করে কম্বল তুলে দেন। এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামীর রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলেই থাকবে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট যাবে ভেসে। বিএনপির ১০ ডিসেম্বর কি হলো? ঘোড়ার ডিম পাড়ল। ১১ জানুয়ারি গণঅবস্থানে বিএনপির নেতৃত্বে ৫৪ দল পাড়ল ৫৪টি ঘোড়ার ডিম। সেই বিএনপির পক্ষে শেখ হাসিনার সরকারকে ফেলে দেওয়া অত সহজ নয়। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ভোট হবে, ফাইনাল খেলা হবে। আওয়ামী লীগ মাঠে আছে, রাজপথেও থাকবে। রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন প্রমুখ। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি শীতের পাখি, নির্বাচন এলে তাদের দেখা যায়। তারা আপনাদের কাছে এলে তাদের শিকল পরিয়ে দিতে হবে। তাদের ভোট দেওয়া যাবে না। এই শীতে উত্তরবঙ্গে তাদের দেখা যায়নি। অথচ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বাড়ি উত্তরবঙ্গে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শীতার্ত মানুষের জন্য সারা দেশে ৩০ লাখ কম্বল বিতরণ করেছেন। আমরা তাঁর নির্দেশে আপনাদের উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কম্বল তুলে দিতে এসেছি।

সর্বশেষ খবর