বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্চে বিশেষ সমাবর্তন

মরণোত্তর ডক্টর অব ল’জ ডিগ্রি দেওয়া হবে বঙ্গবন্ধুকে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ডক্টর অব ল’জ (অনারিজ কজা)’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি প্রদানের সিদ্ধান্তের কথা ২০১৯ সালে জানিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর জন্য আগামী মার্চে বিশেষ একটি সমাবর্তন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি রোধে প্রণীত নীতিমালা। সোমবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মু. সামাদসহ বিভিন্ন অনুষদ, ইনস্টিটিউটের ডিন ও পরিচালকবৃন্দ।

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল জানান, ২৮ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে বিশেষ সমাবর্তনটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিজি তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস অংশগ্রহণ করবেন। সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শিক্ষকদের পদোন্নতি নীতিমালার বিষয়টি কিছু কিছু সংশোধন সাপেক্ষে শিক্ষকদের সুপারিশ অনুযায়ী গৃহীত হয়েছে।

গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে নীতিমালা : একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কিছু সংশোধন সাপেক্ষে গৃহীত হয়েছে চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত নীতিমালা। বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা চৌর্যবৃত্তি রোধে একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। সংশোধন সাপেক্ষে নীতিমালাটি গৃহীত হয়েছে। এর জন্য দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। এ দুই সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষকরা আরও দেখবেন কোথাও কোনো ভুলভ্রান্তি আছে কি না। কিংবা আরও কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করা যায় কি না। এরপর নীতিমালা বাস্তবায়নের দিকে যাব।

জানা গেছে, চৌর্যবৃত্তি রোধবিষয়ক এ নীতিমালার নাম ‘দ্য রুলস ফর দ্য প্রিভেনশন অব প্ল্যাজারিজম’। এটি নিয়ে আলোচনা ও অনুমোদনই ছিল সোমবারের একাডেমিক কাউন্সিলের প্রধান কার্যসূচি। এ নীতিমালায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত প্ল্যাজারিজমের কোনো শাস্তি রাখা হয়নি। ২০ শতাংশের ওপর থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত অপরাধ ‘লেভেল-১’ হিসেবে গণ্য হবে। এর প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা ক্রেডিট ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে ওই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পা-ুলিপি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিকে থিসিস সংশোধনের সুযোগ সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পরিমাণ জরিমানা করা হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা কোর্স বাতিল বা প্রত্যাহারের বিধান রাখা হয়েছে।

‘লেভেল-২’-এর আওতায় পড়বে ৪০-এর ওপর থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তি আর্থিক জরিমানা সাপেক্ষে নকল পা-ুলিপি সংশোধনের জন্য সর্বোচ্চ দেড় বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। ওই সময় সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা ক্রেডিট স্থগিত থাকবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশোধনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা কোর্সটি বাতিল হয়ে যাবে। লেভেল-২-এ দায়ী ব্যক্তি যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা কিংবা গবেষক হন এবং তিনি যদি নকল ডিগ্রির ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট সময়ে পাওয়া সমুদয় অর্থ অনতিবিলম্বে কোষাগারে ফেরত নেওয়া হবে। ডিগ্রি বাতিলের পাশাপাশি পদাবনতি ও চার বছরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ থাকবে।

৬১ শতাংশের ওপরে সামঞ্জস্যকে উচ্চ ধাপ বা লেভেল-৩-এ রাখা হয়েছে। এ মাত্রার সামঞ্জস্যের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা কোর্স দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হতে পারে। দায়ী ব্যক্তি ওই সময়ের মধ্যে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা সাপেক্ষে পা-ুলিপি সংশোধনের সুযোগ পাবেন। এতেও ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ডিগ্রিটি বাতিল ও কোর্স অনুত্তীর্ণ (এফ গ্রেড) হিসেবে গণ্য হবে। কোনো অভিযুক্ত লেভেল-৩ পর্যায়ের অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে তার চাকরিচ্যুতি ও সকল পর্যায়ের প্ল্যাজারিজমের ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রত্যাহারের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি অভিযুক্তের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ডিগ্রি বা কোর্সের সুপারভাইজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জার্নালের ক্ষেত্রে এডিটোরিয়াল বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে নীতিমালায়।

সর্বশেষ খবর