সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

উন্নয়ন ও নিরাপত্তা মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নয়

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

উন্নয়ন ও নিরাপত্তা মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে নয়

পিটার হাস

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা কোনোভাবেই গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ঊর্ধ্বে স্থান পেতে পারে না। এ মূল্যবোধগুলো আসলে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং একে অন্যকে শক্তিশালী করে। মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং গণতন্ত্র সমুন্নত রাখা একটি দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও টেকসই করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। গতকাল ইএমকে সেন্টারে ‘বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্যবসাকে আকর্ষণ করার জন্য উদ্ভাবনের সংস্কৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ জন্য অনলাইন উন্মুক্ত ও স্বাধীন হওয়া দরকার। আর সেই সূত্রে   পরবর্তী যে বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে সেটা হলো- মানবাধিকার। যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহারকারী ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য অনলাইন বিষয়বস্তু পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে এবং এটি কোনো সহজ কাজ নয়। তবে আমরা অনলাইন প্ল্যাটফরমের যে খসড়া আইন দেখেছি সেখানে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে এমন অনলাইন কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুর সংজ্ঞার বিস্তৃত পরিসর নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সাম্প্রতিক ঘোষণার বিষয়ে উদ্বিগ্ন যে, ১৯১টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ব্লক করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সমালোচনা গ্রহণ করার সক্ষমতা এবং অপ্রীতিকর বক্তব্য হলেও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা শক্তিশালী গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য।  যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস নাগরিক সমাজের অনেক সংস্থা এবং সাংবাদিকদের কাছ থেকে এই আইন বিষয়ে শুনেছে। তাদের ভয় হলো এই নিয়ম ও আইন মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতাকে সীমিত করবে। ডেটা সুরক্ষা আইনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে ডেটা সুরক্ষা আইন যদি ডেটা স্থানীয়করণের প্রয়োজনীয়তাকে কঠোরভাবে অনুসরণ করার শর্ত দিয়ে অনুমোদন করা হয় (আইনে পরিণত করা হয়) তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে এমন কিছু আমেরিকান কোম্পানি বাংলাদেশের বাজার ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে। একইভাবে অনলাইন প্ল্যাটফরম পরিচালনার ক্ষেত্রে যদি কোম্পানিগুলোকে ব্যবহারকারীদের তৈরি করা কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুর কারণে অপরাধের দায় নিয়ে ফৌজদারি আইনের মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে তারা এখানে তাদের ব্যবসায় বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকবে। এর পরিণতি বাংলাদেশের জন্য খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রায় ২০০০-এরও বেশি স্টার্টআপকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হতে পারে এবং প্রতিদিন যে কোটি কোটি বাংলাদেশি ব্যবহারকারী তাদের সেবা নিচ্ছেন তারা আর এই সেবাগুলো পাবেন না।

সর্বশেষ খবর