শিরোনাম
বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাঁচ দিনে পাঁচ সিটি ভোট

চিন্তাভাবনা করছে ইসি, আসছে নির্বাচনী অ্যাপ

গোলাম রাব্বানী

নির্বাচন কমিশনের হাতে ব্যবহারযোগ্য ইভিএম কম থাকায় পাঁচ দিনে পাঁচ সিটিতে ভোট করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই গাজীপুর সিটিতে ভোট করতে চায় ইসি; এজন্য ঈদুল ফিতরের পরে এ নির্বাচনের তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার মাঝামাঝি অথবা পরীক্ষা শেষে জুনে ভোট করার চিন্তা রাখা হচ্ছে। এরপরে পর্যায়ক্রমে জুলাইয়ে খুলনা-রাজশাহী এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বরিশাল ও সিলেটে ভোট হবে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই চলতি বছর পাঁচ সিটি নির্বাচন শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব সিটি নির্বাচন শেষ করতে ঈদুল ফিতরের পরই তফসিল দেওয়া শুরু করবে ইসি। যদিও সিটি ভোট নিয়ে তিন ধরনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, প্রথমত- ঈদুল ফিতরের পরে তফসিল দিয়ে মে মাসের শেষ অথবা জুনের শুরুতে গাজীপুরে ভোট করে, পরে চার দিনে চার সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান; দ্বিতীয়ত- জুলাইয়ে খুলনা, রাজশাহী একদিনে এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বরিশাল ও সিলেটে আরেকদিনে ভোট করা। তৃতীয়ত- চার সিটিতে একদিনে এবং গাজীপুর অন্যদিনে ভোট করার চিন্তাও রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের হাতে ইভিএম কম থাকায় সব সিটিতে ইভিএম ব্যবহার করতে পাঁচ সিটিতে পাঁচ দিনে ভোটার করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনাররা। এদিকে পাঁচ সিটি নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে কয়দিনে পাঁচ সিটিতে ভোট হবে এবং কারা সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হবেন। বৈঠকের এজেন্ডায় রয়েছে- বিএমটিএফ এর চিঠির বিষয়ে আলোচনা; দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা; আবর আমিরাতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান এবং বিবিধ।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ১১ মার্চ নির্বাচনী দিনগণনা শুরু হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে। আর ১৩ এপ্রিল নির্বাচনী ক্ষণগণনা শুরু হবে খুলনা; ১৩ এপ্রিল রাজশাহী; ১৪ মে বরিশাল এবং ৬ মে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে। এর আগে সিটি নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, জুনের আগে দু-একটা সিটি ভোট হবে। বাকিগুলো জুনের পরে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিটি ভোট শেষ করব। নির্বাচন উপযোগী হওয়ার শুরুর দিকে সিটি নির্বাচন করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আলমগীর বলেন, যেহেতু আমাদের জাতীয় নির্বাচন আছে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে, সেজন্য আমাদের চেষ্টা থাকবে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন শেষের দিকে না করে প্রথম দিকে করা।

আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ করতে হয়। এ হিসাবে গাজীপুর সিটির নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে ১১ মার্চ থেকে। এ সিটির নির্বাচন ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। খুলনা ও রাজশাহী সিটির ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৩ এপ্রিল। ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বরিশাল সিটি ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ১৪ মে, ১৩ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করতে হবে। সিলেট সিটি ৬ মে থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে, ৬ নভেম্বরের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ভোটের ক্ষণগণনা শুরু হবে ২০ ডিসেম্বর। ১৯ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

আসছে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটারের ভোগান্তি কমাতে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ তৈরির চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ নিয়ে বৈঠক করে ইসি। তবে বৈঠকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অ্যাপটি কেমন হতে পারে, তার একটি রূপরেখা বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। তাতে বলা হয়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নাম ঠিকানা, হলফনামায় দেওয়া তথ্য, ভোট কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য, ভোটার সংক্রান্ত তথ্য, ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য অ্যাপে থাকবে। এই অ্যাপটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে সব তথ্য সবাই দেখতে পারবে না। প্রাথমিকভাবে চিন্তা করা হচ্ছে অ্যাপে কিছু তথ্য থাকবে শুধু ইসির নির্ধারিত ব্যক্তিদের জন্য। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখতে পারবে ইসির কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, অ্যাপটি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। অ্যাপের ডিজাইন কেমন হবে, কোথায় কী থাকবে এগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই অ্যাপটি করতে চাই। তবে এখনো ফাইনাল কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কারণ, এটা তৈরি করতে টেকনিক্যাল ও আর্থিক সাপোর্টের বিষয় রয়েছে। সবকিছু পর্যালোচনা করেই ইসি পরে সিদ্ধান্ত নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর