মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ অধিবেশন সমাপ্ত

বিএনপির সমালোচনায় সরকারি দলের এমপিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির সমালোচনায় সরকারি দলের এমপিরা

জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে সংসদের সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ অধিবেশনের বৈঠক পাঁচ কার্যদিবস পরিচালনার পর গতকাল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে সমাপনী দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, বিএনপির ছত্রচ্ছায়ায় স্বাধীনতাবিরোধীরা সাংবিধানিক সরকার গঠনে বাধা সৃষ্টি করছে। বিএনপি বারবার এই সংসদকে কলঙ্কিত করেছে। তারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এখনো তারা স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী সমাপনী দিনে সরকরি দলের সদস্যরা এসব কথা বলেন। জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে সংসদের সুবর্ণজয়ন্তীর বিশেষ অধিবেশনের বৈঠক শুরু হয় গত ৬ এপ্রিল। এ দিন সংসদে সাতটি নতুন বিল উত্থাপিত হয়। ৭ এপ্রিল সংসদের সুবর্ণজয়ন্তীর বৈঠকে স্মারক ভাষণ প্রদান করেন। একই দিন ১৪৭ বিধিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদে সাধারণ আলোচনার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সমাপনী দিনের সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু।

আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজনীতিতে বিএনপির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু বিএনপি সাধারণত অনৈতিক পথ অনুসরণ করে রাজনীতিতে মিথ্যাচার করছে। তিনি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে ২০০৪ সালে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা উল্লেখ করেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অপর নাম ‘শেখ মুজিবুর রহমান’ এটি একটি কঠিন সত্য, যে সত্য বারবার অন্ধকারকে ভেদ করে বাঙালির হৃদয়ে সূর্যালোক পৌঁছে দেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উন্নয়নে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করায় সংসদের অভ্যুদয় এবং জাতির অস্তিত্ব একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্বে কৃষি ও কৃষকের সাফল্য আজ দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে। যার কারণে হেনরি কিসিঞ্জাররা বাংলাদেশকে আর ‘বটম লেস বাস্কেট’ বলতে পারেন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, অতীতে এই সংসদে জাতির পিতার হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাসসহ অনেক কালো আইন পাস হয়েছে। সংসদে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, খুনি, সন্ত্রাসী, কালোবাজারিদের সদস্য করে আনা হয়েছে। সংসদের বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংস করা, পাশাপাশি সংসদের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালি বিঘ্নিত করা হয়েছে। সংসদকে অকার্যকর করার সব প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সংসদকে কার্যকর করতে সংসদীয় কমিটিগুলোকে সক্রিয় করেছেন। মন্ত্রীদের পরিবর্তে সদস্যদের সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব চালু করাসহ সংসদকে কার্যকর করার সব উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন।

রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণের কল্যাণে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। কিন্তু সামরিক ও স্বৈরশাসকরা গণতন্ত্রকে পদদলিত করেছিল। এখনো স্বাধীনতাবিরোধীরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতাকে অবহেলা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। বাংলাদেশকে তিনি এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছেন, বাংলাদেশকে এখন বিশ্বের অনেক দেশ অনুকরণ করে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

 

 

সর্বশেষ খবর