সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

টানটান উত্তেজনায় তুরস্কে নির্বাচন

৪৭ শতাংশ ভোট গণনায় এগিয়ে এরদোগান

প্রতিদিন ডেস্ক

টানটান উত্তেজনায় তুরস্কে নির্বাচন

টানটান উত্তেজনার মধ্যদিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো তুরস্কে। বাংলাদেশ সময় গত রাত দেড়টা পর্যন্ত ৪৭ শতাংশ ভোট গণনায় রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এগিয়ে ছিলেন। তবে এর আগে বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, বিরোধী প্রার্থী ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টির নেতা (সিএইচপি) কেমাল কিরিচদারোলু এরদোগানের থেকে সামান্য এগিয়ে রয়েছেন। মূল লড়াইটা হচ্ছে পিপলস অ্যালায়েন্স যাতে রয়েছে এরদোগানের ইসলামপন্থি রক্ষণশীল একে পার্টি, ন্যাশনালিস্ট এমএইচপি এবং অন্য কয়েকটি দল। অন্যদিকে, কিরিচদারোলুর জোটে রয়েছে তুরস্কের প্রবাদপ্রতিম নেতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক প্রতিষ্ঠিত ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টিসহ ছয়টি দলের জোট।

তুরস্কের জনগণ দেশটির আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। যাতে নির্ধারিত হবে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ভবিষ্যৎ। নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কুলুচদারুলু, যিনি নির্বাচিত হলে প্রেসিডেন্টের হাতে মি. এরদোগান যে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন, তা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ২০১৬ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাহী ক্ষমতা অনেক বাড়িয়েছেন। কুলুচদারুলু এক বৃহত্তর বিরোধী জোটের প্রার্থী এবং তার নির্বাচনে জেতার সত্যিকারের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।

তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভোট কেন্দ্রগুলোর সামনে  ভোটাররা লাইন দিয়েছেন। তুরস্কের ভোটাররা এমন এক সময়ে এই নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন যখন তাদের কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি এখন লাগামছাড়া। সরকারি হিসেবেই মূল্যস্ফীতির হার ৪৪ শতাংশ। কিন্তু অনেক মানুষের ধারণা এটি আসলে অনেক বেশি হবে। অন্যদিকে তুরস্কের ১১টি প্রদেশ সম্প্রতি দুই দফা ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। আঙ্কারার ভোটার বুরাক ওনডার তার চশমার দোকানে বসে বলছিলেন, লোকজন এখন চশমা কেনা মনে হচ্ছে বাদই দিয়েছেন। ‘লোকে এখন আর চশমার দাম কমানোর জন্য দরদাম পর্যন্ত করে না, তাদের চশমা কেনারই অর্থ নেই।’

প্রেসিডেন্ট এরদোগান অর্থনীতির প্রথাগত নিয়ম ভেঙে যেভাবে সুদের হার কমিয়েছেন, তার ফলে তুরস্কে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গেছে। অথচ ওই একই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে সুদের হার বাড়ানো হচ্ছিল। এদিকে, জার্মানি, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশে থাকেন প্রায় ১৭ লাখ প্রবাসী তুর্কি ভোটার, তারা এরই মধ্যে ভোট দিয়ে ফেলেছেন। সেখানে ভোট দানের হার ছিল ৫৩ শতাংশ। চার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর একজন, মুহাররিম ইন্স ভোটের তিন দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তার ‘চরিত্রে কালিমা লেপনের’ চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এত দেরিতে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় তার নাম ব্যালট পেপারে থেকে যাচ্ছে। তুরস্কের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নিয়ম অনুযায়ী কোনো দলকে পার্লামেন্টে আসন পেতে হলে অন্তত ৭ শতাংশ ভোট পেতে হয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলো আসন পাওয়া নিশ্চিত করতে নির্বাচনী জোট বাঁধে। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একে পার্টি, যেটির সঙ্গে ইসলামপন্থিদের সম্পর্ক আছে, তারা পিপলস অ্যালায়েন্স জোটের অংশ। এই জোটে আরও আছে কট্টর জাতীয়তাবাদী এমএইচপি এবং অন্য দুটি দল। অন্যদিকে মি. কুলুচদারুলুর মধ্য বামপন্থি দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি জোট বেঁধেছে ন্যাশনালিস্ট গুড পার্টি এবং অন্য চারটি ছোট দলের সঙ্গে। বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর