রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভবন নির্মাণ আইন প্রয়োগে সমন্বয়হীনতা

আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ

ভবন নির্মাণ আইন প্রয়োগে সমন্বয়হীনতা

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুযায়ী বেইলি রোডের অগ্নিদুর্ঘটনা কবলিত ভবনে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার দরকার ছিল সেটার কিছুই ছিল না। আমাদের দেশে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত আইন আছে কিন্তু বাস্তবে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো সমন্বয় নেই। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন সংস্থা নির্মাণাধীন বা নির্মিত ভবন তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। সবাই বহুতল বা বাণিজ্যিক ভবনের ছাড়পত্র দিচ্ছে। কিন্তু সরেজমিনে এসে যার যতটুকু দায়িত্ব ছিল সেটুকু কোনো সংস্থা পালন করেনি। স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলছি অথচ আইনের যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে খুবই দুর্বল অবস্থানে আছি।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক ডিজি বলেন, ভবন নির্মাণের কাজ তদারকির দায়িত্বে অনেকগুলো সংস্থা রয়েছে। সবাই কাজ করছে কিন্তু সমন্বয়হীনতার বড় অভাব রয়েছে। কোনো ঘটনা ঘটলে এক সংস্থা আরেক সংস্থার ওপর দায় চাপায়। যারা জননিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করেন তাদেরকে একই ছাদে নিয়ে আসা যায় কি না এই বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন বিষয়টি ভাববার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এটার ওপর কাজ করছেন। আশা করি, তাড়াতাড়ি যেন এ বিষয়গুলো সম্পন্ন হয়। তাহলে এক জায়গা থেকে লাইসেন্সগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শন করা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে আইনের প্রয়োগ করা যাবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শহিদুল্লাহ বলেন, ২০২১ সালে নারায়ণগঞ্জের সেজান জুসের ফ্যাক্টরিতে অগ্নিদুর্ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়। সে ঘটনার পর নন-আরএমজি সেক্টরের করুণ অবস্থা প্রধানমন্ত্রীও বুঝতে পেরেছেন। এ জন্য তাঁর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে প্রধান করে ২৪ জনের একটি জাতীয় কমিটি গঠন করেন। এ কারণে যে এ জাতীয় দুর্ঘটনা কেন ঘটছে? এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? এ ছাড়া বিডাকেও দায়িত্ব দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট যত ডিপার্টমেন্ট আছে, তাদের এক করার। এতে ২০২১ সাল থেকে সারা দেশে পরিদর্শন শুরু হলো। এরপর ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে মোট ১০ হাজারের বেশি কারখানা পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু স্থাপনা পরিদর্শনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা শহরে ১৭২টি শপিং মল পরিদর্শন করেছে এই কম্বাইন্ড টিম। দুঃখের বিষয় হলো, বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময় ভবন তৈরির ক্ষেত্রে লাইসেন্স দিচ্ছে শর্তসাপেক্ষ। কিন্তু সেটা কোনো সংস্থা সুষ্ঠুভাবে তদারকি করছে না।

 

সর্বশেষ খবর