পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জলবায়ু অর্থায়ন ব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো ঋণের ফাঁদে না পড়ে। পরিবেশ উপদেষ্টা গতকাল সিরডাপ অডিটোরিয়ামে ‘জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায়বিচার : বাংলাদেশ ও অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য জলবায়ু ঋণের ফাঁদের ঝুঁকি’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন- নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (ন্যাকম) নির্বাহী পরিচালক ড. মনজুরুল হান্নান খান, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের (বিসিসিটি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম এবং চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম জাকির হোসেন খান। রিজওয়ানা হাসান তাঁর বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উন্নত দেশগুলোর ঐতিহাসিক দায়িত্ব মোকাবিলায় শক্তিশালী বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি শিল্পোন্নত দেশগুলোকে দায়িত্ব গ্রহণ এবং এমনভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান যাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংকট আর প্রকট না হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো একদিকে পরিবেশগত অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি এবং জলবায়ু অর্থায়নকে অবশ্যই ক্ষমতায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত, শোষণের নয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা আরও বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায়বিচার এবং সমতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শুধু তহবিল প্রদান যথেষ্ট নয়; আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে সম্পদ সবচেয়ে দুর্বল সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তোলার ক্ষমতা দেয়। একটি অতি-পুঁজিবাদী মডেল সহজাতভাবেই প্রকৃত জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং সমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। আমাদের এই ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত স্বার্থের দ্বন্দ্ব গভীরভাবে পরীক্ষা করতে হবে এবং লাভের চেয়ে দুর্বলদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া বিকল্প পন্থা অন্বেষণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তরুণরা যথার্থভাবেই জলবায়ু ন্যায়বিচার দাবি করছে। আমাদের তাদের এমনভাবে ক্ষমতায়িত করতে হবে যাতে তারা কর্পোরেট ফাঁদে না পড়ে এবং জলবায়ু সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের প্রবর্তক হয়ে উঠতে পারে।