যুদ্ধ-সংঘাতময় এলাকায় সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা চরম সংকটে রয়েছেন। চলতি বছর পেশাগত কাজ করার সময় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৮ জন সাংবাদিক। ১২ ডিসেম্বর ইউনেস্কো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে গণমাধ্যমকর্মীদের নিদারুণ পরিস্থিতির আলোকপাতকালে আরও জানায়, গাজার মতো অঞ্চলেই নিহত হয়েছেন ৬০% এর অধিক সাংবাদিক। আর এ সংখ্যা হচ্ছে এক দশকেরও অধিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে অজ্যুলে এ প্রসঙ্গে গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত অঞ্চলের সত্যিকারের বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রচার ও প্রকাশের ব্যাপারটির ওপর নির্ভর করে সেখানকার জনদুর্ভোগ হ্রাসে জনমত সুসংগঠিত করার পরিক্রমা। আর এমন মহান একটি দায়িত্ব পালনে প্রাণ দিতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। এটা সমীচীন হতে পারে না। বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ অবস্থার অবসান এবং কর্মরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, রণাঙ্গনের সংবাদ সংগ্রহকালে এ বছর নিহত হন ৪২ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে ১৮ জন ফিলিস্তিনি। এর আগে কোনো বছরই একক কোনো দেশের এতবেশি সাংবাদিক নিহত হওয়ার তথ্য নেই ইউনেস্কোর কাছে। ইউক্রেন, কলম্বিয়া, ইরাক, লেবানন এবং সুদানের মতো কয়েকটি দেশেও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বিরাজমান দেশসমূহে সাংবাদিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেছে ইউনেস্কো। তবে আশার কথা হচ্ছে, যুদ্ধ-সংঘাতের সংবাদ সংগ্রহের ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি হলেও এ বছর সাংবাদিক হত্যার ঘটনা কিছুটা হলেও কমেছে। কারণ, রাজনৈতিক অথবা গৃহ-দাঙ্গা না থাকা অঞ্চলে এ বছর মাত্র ১৬ জন সাংবাদিক/গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। আগের বছরের চেয়ে তা কম। ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ২০২২ সালে ৪৩ জন সাংবাদিক খুন হয়েছিলেন। এ বছর সে সংখ্যা কমে ১২ তে নেমেছে।